• Uncategorized
  • 0

“পুরুষ” নিয়ে বিশেষ সংখ্যায় দেবাশিস মণ্ডল

চলমান বটগাছ

 কৃষ্ণবর্ণ, সুপুরুষ, ছ-ফুট মত লম্বা, পরনে দুধ সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি;
একজন শিক্ষক মানুষকে রোজ সকাল দশটায়, সাইকেলে চেপে
বেরিয়ে পড়তে দেখতাম …….ছেলেবেলায়।
একটু বড় হয়ে ওই মানুষটির সাইকেলের ক্যারিয়ারে বসে
আমিও যেতাম ইস্কুলে।
ইস্কুল চত্বরের বটগাছের ছায়ায় গিয়ে আমরা দাঁড়াতাম
কিছুটা সময় ….আমি তাকিয়ে থাকতাম বটগাছটার ঝুরির দিকে।
কেমন ডাল থেকে নেমে এসেছে ঝুরিগুলো, মাটি ছোঁয়ার জন্য ….
আমি প্রশ্ন করতাম মানুষটিকে –’এগুলো ডাল থেকে নেমে আসে কেন?
ঝুরির নেমে আসার কী প্রয়োজন ?’
“মাটির টানে ….”
মানুষটি উত্তর দিয়েছিল—”সকলকে মাটি আঁকড়েই তো বেঁচে থাকতে হয়”।
সেদিন মানুষটির চোখের কোণায় জল দেখেছিলাম। পাহাড় প্রমাণ কষ্ট ছিল বুকে ।
ছ’বছর বয়সেই পিতৃবিয়োগ হয়েছিল , অসহায় বিধবা মা একা …..তারপর ,
বুক চিতিয়ে, মাটি আঁকড়ে জীবন যুদ্ধে লড়াই করতে করতে এগিয়ে চলা ।
কখনও থামতে দেখিনি, …দেখিনি পিছু হটতে।
আমার কখনও কখনও এই মানুষটিকেই বটগাছ মনে হতো ।
চলমান বটগাছ….যার ছিল বিস্তৃত শাখা প্রশাখা, তলায় সুশীতল ছায়া ।
সেই ছায়ার নিচে বিশ্রাম নিয়ে ভোরের সূর্য ওঠা দেখেছি,
মাঝগগনের সূর্যের উত্তাপ জুড়িয়েছি।
শ্রাবণের কালো মেঘ দেখেছি, দেখেছি প্রবল বারিপাত……..ভিজিনি কখনও।
চলমান বটগাছটার আরও বিশেষ কিছু ছিল …আজও আছে …মাটি ছুঁয়ে থাকা ঝুরি।
সেই মাটি ছুঁয়ে থাকা ঝুরি আঁকড়েই আজও সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছি ….
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।