তিনি জগন্নাথ মিশ্র ও শচীদেবীর পুত্র বিশ্বম্ভর মিশ্র, প্রখর পণ্ডিত ও তার্কিক গৌড়ীয় বৈষ্ণবীয় মতে মধ্বাচার্যের মতাবলম্বী ঈশ্বর পুরী ও পরে কেশব ভারতীর কাছে দীক্ষিত হয়ে ক্রমে চৈতন্যদেব হয়ে উঠলেন। আজ মহাপ্রভু শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যদেবের পুণ্য জন্মদিন। ১৮.০২.১৪৮৬ তারিখে তিনি জন্মেছিলেন। ১৪.০৬.১৫৩৪ তারিখে পুরীতে, নীলাচলে তাঁর প্রয়াণ।
তিনি বৈষ্ণব সমাজকে দিয়েছেন অচিন্ত্যভেদাভেদ তত্ত্ব। “আচণ্ডালে ধরি দেই কোল”, মহাপ্রভুর অন্যতম বক্তব্য। চৈতন্যদেবের দিব্যজীবন ধৃত হয়েছে কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্য চরিতামৃত গ্রন্থে, বৃন্দাবন দাসের চৈতন্য ভাগবতে, আর লোচন দাসের চৈতন্য মঙ্গলে। সংস্কৃত ভাষায় কবি কর্ণপুর ও মুরারিগুপ্ত চৈতন্য জীবনী লিখেছেন। চৈতন্য দেব তাঁর বিশিষ্ট দর্শন প্রচারের জন্য ছয়জন বিশিষ্ট ও গুণী দার্শনিক কে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এঁরা সকলে ষড়গোস্বামী নামে পরিচিত। এঁরা হলেন ১ রূপ গোস্বামী, ২ সনাতন গোস্বামী ৩ গোপাল ভট্ট গোস্বামী, ৪ রঘুনাথ ভট্ট গোস্বামী, ৫ রঘুনাথ দাস গোস্বামী, ও ৬ জীব গোস্বামী।
চৈতন্য দেবের অসামান্য জীবন বৈষ্ণব পদাবলীকে নূতন ধারায় প্রবাহিত করেছে। রাধা কৃষ্ণের প্রেমতত্ত্ব চৈতন্যদেবের জীবনের প্রেক্ষিতে দেখে গৌরচন্দ্রিকার পদ লিখেছেন চৈতন্যোত্তর যুগের কবিরা।
কাজীর হুকুমের বিরুদ্ধে অহিংস সত্যাগ্রহ গড়ে তুলে গরিব দলিত মানুষের মুখে ভাষা যোগানোর মতো মহান উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি আমার শ্রদ্ধেয়। “জীবে দয়া তব পরম ধর্ম, জীবে দয়া তব কই..”. লিখে বাঙালি কবি তাঁকে প্রণিপাত জানিয়েছেন। সে কবিতা কৈশোরে পড়েছি। মহাত্মা গান্ধী চৈতন্যদেবকে পরম শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। বলেছেন, “চৈতন্যদেবের কাছে মহাত্মা রামমোহন রায়ও একজন পিগমি, আমি তো কোন্ ছার।”