• Uncategorized
  • 0

গদ্য বোলো না -তে সুজান মিঠি

অসুখ যুদ্ধের সৈনিকের কাছে মেয়ের চিঠি

আমার মা,
তুমি ভালো নেই আমি জানি,
যুদ্ধের সৈনিকদের ভালো না থাকলেও ভালো
থাকতে হয় বাবা বলেছে আমায়।
তুমি তো যুদ্ধের সৈনিক এখন।
এইতো সেদিনও, তুমি হাসপাতাল থেকে ফিরলেই
আমি তোমার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়তাম।
বলতাম, তোমায় আর যেতে দেব না মা!
…কিন্তু এখন তুমি এস না মা।
এই দুষ্টু শরীরখারাপটাকে ইনজেকশন
দিয়ে তাড়িয়ে দাও।
বাবা বলেছে…আমরাও পারি
হাত ধুয়ে, মুখে মাস্ক পড়ে
ঘরে থেকেও পারি।
জানো মা! ঠাম্মা, তুমি এলেই বলতো,
‘…বৌমা চা করো।’ বলতো
‘…রুমির মা রান্না পারে না
তুমি করে দাও বৌমা।’
বলতো,
‘…রাতের রুটিটা তুমি না করলে
খাবই না!’
জানো সেই ঠাম্মা বাতের ব্যাথা নিয়ে
রান্না করছে, ঘর মুছছে,
বাবাও কত কাজ করছে।
ঠাম্মা কাল পিসিকে বলছিল ফোনে
…’সুধা! তোর বৌদি যুদ্ধে গেছে রে!
ও এখন ডাক্তার নয়, এই
ব্যাধির যুদ্ধে ভগবান।’
বাবা বলছিল, ‘খুকু আমি তোর মায়ের
কাছে তোকে নিয়ে যাবো একদিন।’
আমি কিন্তু না বলেছি মা।
বলেছি, আমাকে দেখে আমার মা যদি
কেঁদে ফেলে তবে আমার মাকে
শত্রু অসুখটা দুর্বল ভাববে না!
তুমিই তো বলো, তাই না মা?
‘কান্না দুর্বলতা প্রকাশ করে।’
বাবা আমার চুল বেঁধে দেয়,
খাইয়ে দেয়।
ঠাম্মা বলেছে ঠাম্মার বাতের ব্যথা
আর নেই।
মোবাইলে তোমার ছবির কপালে
চুমো খেয়েছে আজ সকালে।
আমি, আমরা একদম ঠিক আছি
মা বাড়িতে।
শুধু তুমি যুদ্ধ শেষ করে
তাড়াতাড়ি ফিরে এসো।
ওই অদৃশ্য শত্রুকে এমন
ইনজেকশন দাও
যেন ও আর কখনো
পৃথিবীকে কোনো মুখোশ
পড়াতে না পারে।
মাগো, পৃথিবীর মুখোশ খুলে
তারপর তুমি ফিরে এসো।
ততক্ষণ আমি লক্ষ্মী মেয়ে হয়েই
থাকবো।
তোমার
খুকু।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।