এই দুটাকার বস্তিজীবনেও কিছু নেশা আছে
আশ্চর্যরকম…
ভাটিখানার টলোমলো বেঞ্চি আর মাটির খুরি আমাকে টানেনা
একবার এমনকি কবিসম্মেলনে মহুয়া খাইনি, তাই
আমাকে অচ্ছুৎ ব’লে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন
প্রান্তিক কবিতাধিরাজ
ধোপা-নাপিত বন্ধ হয়েছিল চারমাসের জন্য
খিদেমুখে ধুলোয় গোঁজ হয়ে শুয়ে থাকার দিনগুলোয়
পৃথিবীতে রেজারেকশন হয়-
দরজা খুলে দেয় কেউ, আর
দক্ষিণ আকাশে জ্বলে ওঠে মেধাবী লুব্ধক
সেদিন আমার একপাত্তরের বন্ধুটি ঘরে ফেরে
সে দুহাতে ভরে দেয় পূর্বজদের মাংস -মেদ
বলে, এই নে রুটি
গণ্ডূষ ভরে দেয় আঙুরলতার জল
সোমরসের পাত্রে সেদিন প্রপিতামহের রক্তের স্বাদ পাই আমি
ভীষণ শোনিতগন্ধ টুঁটি কামড়ে তারপর ফেলে দিয়ে গেছে
দূরে, আরেক জঙ্গলে…
এই ভয়াবহ কৌমজীবনে,
এই ভেড়ার পালের মধ্যে থেকে,
ভুলে গেছিলাম আমি সত্যিকার মুখের আদল
কবিতা লেখার জন্য গলায় ঘন্টি বেঁধে
ঘাসের অমৃত খেয়ে নেশা হয়না ইদানীং আর…
কষদাঁতে লেগে থাকে মৃত দেবতার
দেহখন্ড, ছিন্নভিন্ন জ্যোতিঃ
সিংহের জাতক আমি, এই দুটাকার বস্তিজীবনেও
আমাকে সমঝে চলে সরমার সন্তানসন্ততি
একটালিরিক
যেসব নামের নীচে জমে আছে বিচ্ছেদের মেঘ
কেউ ডাকেনি অনেকদিন ব’লে
যে নাম বিদ্যুৎগর্ভ, অভিমানী, জলভারনত
ঘাড় গোঁজ করে বসে আছে
হৃদয় ঈশান কোণে, ঠাঁইপিঁড়ি মৃদু নড়ছে না
আচমকা ছুটে এসে এলোমেলো করে দেবে শাড়ি
ততটা দামাল হাওয়া যার ঘরে এখনো ফোটেনি
মলমাস। ধুলোঢাকা আকাশ ও আঙিনা
যেসব নামের নীচে আরও কিছু পর্ণমোচী দিন
আরও কিছু ঝরা পাতা
নীচু মুখ – উপলক্ষ্যহীনা…
ভেজা চিঠিগুলো তার ঠিকানায়, অলকাপুরীতে
সানন্দ দুহাতে নিয়ে, পিছুটান, তুই কি যাবিনা?