• Uncategorized
  • 0

কবিতায় অজিত গঙ্গোপাধ্যায়

মাটির ঘর

ফুটফুটে চেহারার  শিশু যেন ফুলের কুঁড়ি
দেখলে মনে হয় আদর করে জড়িয়ে ধরি
ফুলের মতো পবিত্র- নিষ্পাপ সদ্য প্রস্ফুটিত
মন ভোলানো মুখের হাসি ঠিক যেন পরী

দেখতে যেমনই সুন্দর ঠিক তেমনি কথা
মনে হয়না একে ছেড়ে অন্য কোথাও যাই
যা চাইছি তাই দিচ্ছে যেন কত বড় দাতা
যেন আজ এক অন্য রকম অনুভুতি  পাই

যখন  আমি বলি ,আজ তোমার বাড়ি যাবো,
ছোট্ট শিশু উত্তর দেয় তুমি কি আমার পর
আমার সাথে যখন খুশি যেতেই তুমি পারো
তবে আমার  একটুখানি ছোট্ট মাটির ঘর

আমার বাবা বড্ড গরীব পাইনা ভালো খেতে
বাঁশের মাঝে খড়ের ছাউনি ছোট্ট মাটির ঘরে
ইচ্ছে হলে পারো তুমি আমার সাথেই যেতে
তবে তুমি আমায় কিন্তু দোষ দিওনা পরে

আমার ঘরে গেলে তোমার লাগবে গায়ে মাটি
গোবর মাটির গন্ধে তোমার গুলিয়ে যাবে গা
তোমার নষ্ট হবে কি সুন্দর পোশাক পরিপাটি
তখন নিজেই তুমি বলে উঠবে ছ্যা ছ্যা ছ্যা

শিশুর কথায় পড়লো যেন আমার পিঠে ঘা
এখন টাকার অহঙ্কারে মানুষ বড্ড স্বার্থপর
কারো আছে অট্টালিকা, জমি হাজার বিঘা,
তালপাতার ছাউনি দেওয়া কারো মাটিরঘর

ছোট্ট শিশুটি বুঝতে পেরেছে নির্মম বাস্তব
প্রচন্ড শীতে গা’য়ে কেন তার ছেঁড়া কাঁথা
চাইলেও কেন পায়না সে খেতে যা চায় সব
কেন মাটির ঘর আর ছিন্ন বস্ত্রের দারিদ্রতা

আমার মনেও ভেসে উঠে সেই পুরণো ছবি
মনে পড়ে সেই  মাটির ঘরের সকল স্মৃতি
মা-বাবার সাথে সেদিনের নানা ঘটনা সবি
গোবর দেওয়া মাটির ঘরের নানান রীতি

মাটির ঘরের এমন অর্থ শুনিনি আগে
ছোট্ট শিশুর কথায় আমার আঁখি ছলছল
দারিদ্র্যতার অভিজ্ঞতা উঠে মনে জেগে
কপোল বেয়ে বয়ে যায় এক সাগরের জল

স্বাধীন দেশের  শিশুদেরও নেই স্বাধীনতা
নেই খাদ্য, পোশাক, পড়ার মতো বই পত্তর
নেই বই এর ব্যাগ,ঝর্ণা কলম ,লেখার খাতা
নেই মায়ের সাথে কাল কাটাবার একটুকু ঘর

ঘরবিহীন এমন মানুষ আছে কয়েক কোটি
এখনো যাদের একটুও নেই মাথা গোঁজার ঠাঁই
স্বাধীন দেশের মানুষ হয়েও পায়না দুটো রুটি
বাসস্থানের জন্য যাদের একটুও ঘর নাই ।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।