কবিতায়নে হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়
ভূত প্রেতের লড়াই
ভূত আর প্রেতের লড়াইয়ে যেদিন প্রেত জিতে গেল সেদিন ই বুঝলাম কলকাতার হাওয়া বাতাস এবার ভারী করে দেবে
টাটাসেন্টারের উপর থেকে আমি দেখছিলাম
একজোড়া কপোত কপোতী গঙ্গার পাড়ে বসে
আকাশের কিনার ঘেঁষে গান গাইছে
…আজ জ্যোৎস্না রাতে…
প্রেত এসে বলল সমস্ত কলকারখানা এক্ষুনি বন্ধ করে দাও,মানুষের হাতে যেন কোনো কাজ না থাকে,ক্ষমাহীন মৃত্যু কাকে বলে এবার দেখাবো
মানুষ বেকার হবে, এমন পর্যায়ে পৌঁছবে
নারীরা পথে ঘাটে নগ্ন হতে দ্বিধা করবে না
দুরন্ত কামুক যুবা নামে যাকে এক ডাকে
চিনত সবাই বর্ণপরিচয় শিখতে আমাদের জয়রামপুরের ফ্রি প্রাইমারি তে ভর্তি হয়ছিল
সে এখন হর হর মহেশ্বর …
ভূতকে এখন বেধে রেখেছে রক্ষীরা
পায়ে হাতে শিকল ,গোপনাঙ্গে ইলেকট্রিক শক
জিভ কেটে নিয়েছে তাই বলতে পারেনা কোনো কথা,ককিয়ে উঠছে আর নেতিয়ে পড়ছে
একটু ধাতস্থ হলেই প্রেত বলছে কেমনটি
বলেছিলুম কীনা ক্ষমতা পেলে নরক করে দেবো
প্রেত এখন মরণকাতর সুন্দরীদের
চুম্বনে ও আলিঙ্গনে বিভোর
বেহালা বাজায় ,মিছিল দেখলেই বলে গায়ে আগুন লাগিয়ে দাও
বলে যুদ্ধ ছাড়া মানুষ সভ্য হয় না
সুতরাং শান্তি নয় যুদ্ধ ই আসলে শেষ হাতিয়ার
সাইরেন
একটা সাইরেন বাজল আর পর্দায় ফুটে উঠল
এক ঝলক মৃত্যুদৃশ্য
চালশে পড়া চোখে তখন প্রস্রবণ
নিষিদ্ধ টিলা জুড়ে স্বর্গের দরোজা
কোথাকার তরবারি কোথায় লুকানো
ধুলোর ভিতরে শুধু ধুলো হয়ে থাকা
জলের ভিতরে জল,বাতাসে তখনও ব্যাকগ্রাউন্ড
মিউজিক, ছায়া ফেলি ছবি হয়
মনে হয় বিদেশেই আছি
কাছে পিঠে কোথাও সমুদ্র…
উপহার
প্রতিটি গাছের পাতায় প্রেমের আগুন ছড়িয়ে গেছে, ঝড়ের পর চাদ উঠল
ঝড়ের সঙ্গে সে কি বৃষ্টি!
উপকূলে আসমুদ্রহিমাচলে
সবাই বলল বসন্ত জাগ্রত দ্বারে
ঘোড়ার খুরে নিষ্পেষিত হল মাটি
নদী উপকূল থেকে উপকূলে ফোন বেজে উঠল
পথ ভুল করে হাওয়া এল হরির লুটের বাতাসা
নিয়ে তার দুটো হাত একটা পরম,আরেকটা চরম, পরম বলল
তোমাকে দেখলে সমস্ত শব্দের মাত্রা ,ছন্দ হারিয়ে যায় চরম বলল পরমকে
মৃদু, নরম অথচ অসম্ভব কঠিন
অনুশাসন আমি জীবনে মানিনি
বৃষ্টি ধারার ভিতর দিয়ে বেরিয়ে এল তাদের এক একজনের সত্যি
এখন ভোর হয়ে এল ,চোখে মুখে জল দিচ্ছে
শিশির ধানশীষ বেলপাতা
ঝড়ের পর চাদ ওঠার মতো সোদা গন্ধময় ঘাস ছড়িয়ে র ইল চরাচরে, উপকূলে আসমুদ্রহিমাচলে এ জন্মের শেষ উপহার…