• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকা -তে পলাশ চৌধুরী (পর্ব – ৯)

স্টেজের পাশেই স্বয়ংসিদ্ধা

নবম পর্ব

এসব ঝুল আলোচনা, অবাধ্যতা, অশ্লীলতায় নেকড়ে হয়ে যাওয়া, চাওয়া বা পাওয়ার পরিচয় বদলে ফেলা, সবই নীহারের একলার ছিল একটা সময়। আজ বয়স হয়েছে নীহারের, শরীরের সাথে মনের জোরও কমেছে অনেকখানি। সেইসব গাঁতাহাস্য, প্রেমিক প্রলাপ, ঝরে পড়া বা ঝেড়ে ফেলার কথা, এখন সবই অতীত, এমনকি তার “শাহিভৃত্য” পত্রিকাটিও। এখন তার প্রেমের কথা মনে পড়লে সে বলে—
“প্রেম আমাকে মারতে পারেনি কবেও, প্রেমের জন্য আমি একবার মরেছিলাম শুধু”।
কিছু প্রেম জীবনে দৃষ্টান্ত হয়ে রয়ে যায়, কিছু প্রেম চলন বদলে দেয়, আবার কিছু প্রেম পরিচিতি’ই বদলে দেয়। ঠিক যেভাবে নীহারকে চিরতরে বদলে দিয়েছিল একটা স্বয়ংসিদ্ধা। যদিও এটাই নীহারের প্রথম প্রেম ছিল না, তবুও এই প্রেমই বদলে দিয়েছিল নীহারকে। জীবনের প্রথম প্রেমটা বরাবরই ছেলেমানুষী আবেগ দিয়ে গড়া হয় এবং সেটাই সবচেয়ে পবিত্র প্রেম হয়। কিন্তু সেই স্থায়ী হয় না বেশিরভাগ। মনের গাঢ় অন্ধকার হতে মাঝেমধ্যে উঁকি মারে শুধু। এটা কষ্টও দেয় না বিশেষ, শুধু কিছু স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখে অবলম্বন হিসাবে। নীহারের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
জীবনের দ্বিতীয় প্রেমটি বরাবর সিরিয়াস হয়, ঠিক যেভাবে জীবনের প্রথম পর্বের লেখাগুলো খুব প্রিয় হওয়া সত্ত্বেও খুব বেশি মূল্যবান হয় না, কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে পরিচয় বদলে হঠাৎ সিরিয়াস হয়ে যায় লেখাগুলো সেরকমই কিছুটা। একটা আলেয়ার জীবন পেরিয়ে, একটা ঠিকঠাক টেলিপ্রম্পটার হয়ে, নীহারের জীবনে আগমন ঘটে স্বয়ংসিদ্ধার আহার্য বিকেলের প্রাক্ মূহুর্তে। কে জানত সিম্প্যাথি কবেও পবিত্রতার শিখণ্ডী বানিয়ে দেবে নীহারকে!
যোগাযোগ সেভাবে কবেও যৌন হয় না, আসলে যৌনতা এলেই যোগাযোগ গাঢ় হয়। একথা জানা সত্ত্বেও নীহার নিজেকে আটকে রাখতে পারেনি বা চায়নি নিজেকে আটকাতে। আসলে নষ্ট সময় বা চরিত্র হয় না, নষ্ট হয় প্রেম হারিয়ে ফেলার ভয়ে বা সংশয়ে।
এই প্রেমের কাছে এসে যেভাবে জীবনের শিক্ষা পাওয়া যায় তার চেয়ে অনেক বেশি জীবনকে জানা যায় নষ্টামি থেকে। অশ্লীলতা একপ্রকারের আর্ট যেটা নীহার বরাবরই বলে। এর জন্য নীহারকেও অনেক লড়াই অন্ধকার উপেক্ষা করে অথচ অন্ধকার বাঁচিয়েই লড়তে হয়েছিল। নীহারের ভাষায় বললে অশ্লীলতাও অনায়াসে পাল্টে নেয় নিজের ছায়াছবি—
“নষ্ট কেউ ইচ্ছে করে হয় না, আসলে নষ্টরা যখন সুখ দেয় তখন সভ্যদের আমি ঘৃণা করি।”

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।