ভাগ হয়ে যাচ্ছে জমি, বাড়ি, ঘর,
ব্যাংকের টাকা, প্রফিডেন্ড ফান্ড, এম আই এস এর ভরসা, এমনকি সতেজ জামা, পাঞ্জাবী সব।
কলম, ঘড়ি, সোনার চেন, এডি বসানো আংটি, আসবাব… বাদ পড়ছে না কিছুই।
চেয়ার আর টেবিলও ভাগ হচ্ছে ডিভোর্সী দম্পতির মতো, আলাদা আলাদা সংসারে।
খাবার থালা, জলের গ্লাস, পায়েসের বাটি
কিচ্ছুর ভাগ নিতে ভুলে যায়নি কেউ।
বাবার সখের মেহগনি গাছটা টুকরো টুকরো হয়ে
রাস্তায় পাতা ছড়াতে ছড়াতে চলে গেলো, বাবার মতই।
দাম ভাগ হয়ে গেলো দেশটার মতো ।
শুধু সেই তাকিয়াটা,
বাবার কোলে তিন বছরের শিশুটির মতো শুয়ে শুয়ে
ছড়িয়ে দিত তুলো চোখে, নাকে, মুখে…
সেই তাকিয়াটা,
বৃদ্ধ বাবা যার কাঁধে ভর দিয়ে উঠে বসতো খাটে।
সেই তাকিয়াটা…
যার কোলের উপর শুয়ে বাবার মাথাটা আস্তে আস্তে
নুয়ে গেছিল বিকেলের লজ্জাব্বতীর মতো।
সেই তাকিয়াটা,
যার গায় বাবার শেষ দুফোঁটা চোখের জল
সযত্নে রাখা ছিল সারারাত…
সেই তাকিয়াটা।
রাস্তার ছেলেটা আজ খুব খুশি,
ওপাড়ার ডাস্টবিন থেকে
একটা ফাটা তাকিয়া পেয়েছে আজ।
ওটা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে শুয়েছে রাস্তায়।
ঘুমন্ত ছেলের চোখে, নাকে, মুখে তুলো উড়ে চলেছে স্বপ্নের মতো।
ছেলেটা নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে তাকিয়াটা জড়িয়ে।
ল্যাম্পপোস্টএর আলোয় এক রাতের মধ্যে
তাকিয়াটা কখন যেন বাবা হয়ে উঠেছে,
যার কোনও ভাগ হয় না কখনো …।