• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকা -তে সৌরভ বর্ধন (পর্ব – ৯)

কবিতায় আমি কলার তুলতে চাই (পর্ব – ৯)

আমাকে পাখির ভাষায় কথা বলো, একটা ডোরাকাটা পাখি, পাখি আমার প্রেমিক হয় না কখনও, আমি উড়তে পারি না, তার চেয়েও বড়ো কথা পাখির গায়ে লোম নেই, আমার গায়ে পালক। আমি অনেকটা তেল জোগাড় করেছিলাম পালকগুলোকে প্রতিদিন চকচকে করে তুলতে হবে। আমার যে এক মুরগি ছিল তার থেকে শিখেছিলাম ঘাড় মুচড়িয়ে কীভাবে পালক চাটতে হয়, হ্যাঁ চাটতে হয়, আমি দেখেছি পাখিদের জিভ থাকে, আমি দেখেছি ছাল-পালকহীন পাখির শরীর নতুনহাটের আরব সেখ পায়ে চেপে ধরে একের পর এক… আমার সাথে কথা বলতে বলতে উধাও হয়ে যায় আরও কিছু ডাকতে চাওয়া পাখিটার মুণ্ডু, অন্য পাখিরা তখনও ভাবতে পারে না তাদেরও মুণ্ডু নেই, ভাবতে পারে না পাতার সন্ধি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গ্যাছে তাদের নখরদেহ। যারা এতসব ভাবতে পারে না তাদের আমরা উন্মাদ অথচ তাদের পেশীর থেকে ছিটকে আসে অক্ষর বাতাসে বাতাসে ধাক্কা খেয়ে তারা ধ্বনি। আসলে আমরা কোরাস নই, নয়েজ সৃষ্টি করি, আমরা তারস্বরে নিজেকে ভিক্ষা চাইতে চাইতে উপলদ্ধি করি আরব সেখ খুশি, তার ছেলেমেয়েরাও। এলাকার ভালো ছেলে চাকুরীজীবী বিত্তবান লেবার সবাই পরিচিত তৃপ্তি নিয়ে ঢেকুর লিখবে এবার, কবিতা পারলে তাও আশঙ্কা ছিল, তার আগের আগের আগের কবিরাও রক্ত নিয়ে অসংখ্য গাদাগুচ্ছের সংশয় প্রকাশ করেছে লেখায়, প্রচুর কবিতা লিখেছে লাল রঙের…
আজ পাশের বাড়ির নিমগাছে ঘুড়ির সুতোতে আটকে পড়া ছাতারে পাখিটাকে মুক্ত করে যখন নীচে নামছি, আমার শিরায় তৃপ্তির রক্ত সঞ্চালন, অতৃপ্তি থাকলে রক্ত কি অন্যভাবে প্রবাহিত হয়! আমার কিন্তু হাত-পা কাঁপছে এখনও, পাখিটার ডানা কাঁপছিল কিনা জানি না, মুক্তির পর মুহূর্তেই সে তো উড়ান, দেখে কে বলবে অবিকল হিংসার মতো ঝুলছিল সে এক ডানায় একটু আগেই! আমিও দেখছিলাম

সূর্যের সাথে আলোর সম্পর্ক কতটা! যতটা উঠলে দিন হয় ঠিক ততটা, নাকি তারও বেশি! সকালের গভীরে যে একটা তীব্র রাত সেঁধিয়ে থাকে, রেহাই পাওয়া মুশকিল যার থেকে সে জানে ভোর দিয়ে যার সূচনা হয় তার শেষও হতে পারে ভোর দিয়ে। কাঁঠাল গাছের লাল পাতাটি যেমন    নিজেও জানে না, ওউ সূর্য ধরে, ধ’রে রাখে জালের ভেতর কুমকুম। পাঁজর ঘেঁষে ওর ক্লোরফিল শুষে ন্যায় দলীয় ক্যাডাররা। ও শুধু গাছের জন্য সহ্য করে সব সৎকার। পিচের ফুটো দিয়ে বুদবুদ শুষে, পায়ের থেকে পুরনো চামড়া, হাতের থেকে জল সরানোর মতো অবস্থা নিয়ে একরাশ ভিজে ঘোড়ার সামনে দাঁড়ায় যার অস্থির পিঠে হাজারখানেক স্তব্ধতার বোঝা, যার বালামচি, গোঁফ, লোম, শিশ্ন বেয়ে ঘাম পড়ছে, বাড়িমণ্ডলের উল্টো দিকে পাকা ধানের মই ভিজে যাচ্ছে, দুলছে, ভাঙছে, তারও পেছনে ঝাঁকে ঝাঁকে দৌড়ে যাচ্ছে ধোঁয়া। যে গুটিকতক ঘোড়ার দৌড়াতে ভালো লাগে তারা শহর ছেড়ে চলে যায় অনেক দূরে…

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।