চারণকবি বৈদ্যনাথ -এর ৮৭ তম জন্মদিন

” এখন পৃথিবী জুড়ে কবিতার বড়ো প্রয়োজন”
জন্মঃ ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৩২।
মহাপ্রয়াণঃ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০০।
আজ কবির ৮৭তম জন্মদিন। মৃত্যুর দু’দশক পরেও তিনি কত প্রাসঙ্গিক তা তাঁর লেখা পাঠ না করলে জানা যায় না বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরে জন্ম এই কবি রাষ্ট্রীয় খেতাব না পেলেও জনমানসে আজও উজ্জ্বল হয়ে আছেন।
আসুন পড়ে নিই তাঁর লেখা কয়েকটি পঙক্তি।
“আসুন কবি আসুন
শব্দ খুঁজতে বেরিয়ে পড়ি
শব্দ ভালোবাসুন”
“ঈড়া ও পিঙ্গলা নদীর
দুই তীরেতে নৌকো বাঁধা
কেবল তারই প্রতীক্ষাতে
হাসা কাঁদা”
“হে পুরুষ হে শতাব্দী মগ্ন হও জীবনের ধ্যানে অনেক তো সিগারেট পুড়ে পুড়ে ছাই হ’ল
রেস্তোরাঁ ও চায়ের দোকানে”
” এখন পৃথিবী জুড়ে কবিতার বড়ো প্রয়োজন”
“শরীর জুড়ে বোলতা আছে ছ’টা
আঁকবো কোথায় পদাবলীর ফোঁটা ”
“পিছে পড়ে আছো
নিচে পড়ে আছো যারা
মাথা উঁচু করে
দাঁড়াও আজকে তারা ”
“বুকের ভেতর বুকটা শুধু উথাল পাথাল
আসছে কি সেই মুক্ত মানুষ, মুক্ত সকাল?”
” যে গান হবে ব্রাত্যজনের ব্যথার মালা
যে সুর হবে জীবনমুখী, আগুন জ্বালা”
” কবিতাকে ভালোবেসে আমি তো আউল হয়ে গেছি ”
“কবি লেখে তার সত্যবাক্য
সত্য শব্দ সাজিয়ে
ছন্দ ও সুরে বাজিয়ে
পৃথিবীকে ধরে বুকের গভীরে
নাচে ও নাচায় সবারে
কবি ভাষা দেয় পিছে পড়ে থাকা
অন্ধ এবং বোবারে ”

কবির আত্মজীবনী
“মানি না বর্ণ বিদ্বেষ, কোনো বাধা
মানি না ঘৃণ্য জাতপাত, কালো শাদা ”
” রক্তের আলপনা এঁকে এঁকে
আমি শুধু চলে যাবো
শিল্পীর পদাঙ্কটুকু রেখে ”
“১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০০ সকাল সাড়ে এগারোটায় কলকাতার এস এস কে এম হাসপাতালে কবির জীবনাবসান। বেতারে, দূরদর্শনে সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশজুড়ে শোকের ছায়া। পরের দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০০ আনন্দবাজার পত্রিকা, আজকাল, বর্তমান, সংবাদ প্রতিদিন, গণশক্তি প্রভৃতি দৈনিক সংবাদপত্রে প্রচারিত হয় সেই খবর। বেতারে কবিকে নিয়ে প্রচারিত হয় বিশেষ সংবাদ সমীক্ষা। ” সংবাদ প্রতিদিন ” পত্রিকায় কবিকে নিয়ে উত্তর সম্পাদকীয় লেখেন সাহিত্যিক ভগীরথ মিশ্র। কলকাতা, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে হয় শোকসভা। প্রয়াত কবিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কলকাতা, মালদহ, চন্দননগর, আসানসোল প্রভৃতি এলাকার বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকা বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে। কবির জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচিত এই গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে কয়েকটি সংবাদপত্রের সেই খবর।”

কবির প্রয়াণ। সাহিত্য আকাদেমির পাঠানো শোকবার্তা ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০০০। “চারন কবি বৈদ্যনাথঃ জীবন অ সাহিত্য” গ্রন্থ থেকে
কৃতজ্ঞতা –
কবির সুযোগ্য সন্তান স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়কে। তাঁর অনুমতিতে সব ছবি ও লেখা সংগৃহীত হয়েছে তাঁর ফেসবুক পোস্ট থেকে।