• Uncategorized
  • 0

গুচ্ছ ছড়া-কবিতায় মালিপাখি

১। চাকা

ভোরের আলো, গানের ঝালর, আর কি কি চাও ?
বেশ তো নদী ডাকছে তোমায়, চরকি বানাও !
চরকি ঘোরে, চরকি ঘোরে, চরকি ঘোরে — !
চরকি হরিণ ঘুরতে, ঘুরতে জুড়েছে নাচ !
পাগল হয়ে দেখছো কাকে দেবদারু গাছ ?
চরকি ঘোরে, চরকি ঘোরে, চরকি ঘোরে — !
চরকি পিসি, তুলিটা দাও ! আঁকবো কি ফুল ?
ওইতো ও ঘাস মালীর বাগান, সোনালী চুল ।
চরকি ঘোরে, চরকি ঘোরে, চরকি ঘোরে — !
চরকি সাঁকো কেমন আছে সেই ছবি গ্রাম ?
একটু বোলো, ওকেও ভালোবেসে ছিলাম !
চরকি ঘোরে, চরকি ঘোরে, চরকি ঘোরে — !
ও চরকি বোন তোমার এখন ঢেউ গোনা কাজ ?
কেউ কাছে নেই, দাঁড়িয়ে একা ! কি লিখবো আজ ?
চরকি ঘোরে, চরকি ঘোরে, চরকি ঘোরে — !

২। স্বপ্ন

ঝাউ বুঝি এক গ্রাম ?
শুনেই ঘোরে, ঘন সবুজ সাগরে ডুবলাম ।
ডুবতে, ডুবতে হাঁস ।
ঝিনুক কিংবা ঘোড়াও হচ্ছে, ওড়াচ্ছে নীল ঘাস !
ডুবতে ডুবতে মন,
কুড়াচ্ছে মেঘ, পাহাড় চূড়ো । মল্লিকা নির্জন —
শব্দ বুনে ঝুপ — !
লাফিয়ে পড়ে স্বপ্ন গুলো যে চরে টুপ্‌ টুপ্‌ —
ঝরছে এবং ঘর
বানিয়ে দিচ্ছে আলোর রাজা এক থেকে পর পর — !
ঝাউ বুঝি এক গ্রাম ?
শুনেই ঘোরে, ঘন সবুজ সাগরে ডুবলাম — !

৩। মা

কোথায় আমার পদ্য বাবুই ! কোথায় আমার শিউলি আতর গাঁটি ?
খুঁজতে খুঁজতে দিন কেটে যায় তবু আপন মনে একলা চাঁদে হাঁটি ।
হাঁটতে হাঁটতে কোথায় যে যাই আমি , চাঁদের দেশের চরকা কাটা বুড়ি ;
কেবল ছড়ায় আলোর আবীর হেসে । পথ গুলো তাই আপন মনে জুড়ি ।
বুকের ভিতর কত কী ফুল ফোটে ! একলা আমি শোনাই যে গান কাকে ?
দু হাত দিয়ে জড়িয়ে থাকি আমি সেই যে আমার ছেলেবেলার মাকে !
কোথায় আমার পদ্য সানাই ! কোথায় আমি সাগরকে ফের ডেকে ,
বলতে পারি এই যে আমার ও ভাই ; পথ চলি রোজ তোমায় বুকে রেখে ।
দাও শুধু ভাই ছোটার সাহস তুমি । পেরুই আবার অচেনা সব সাঁকো ।
বাড়িয়ে দিলুম আশার দু হাত ভোরে । আমায় শুধু আপন করে ডাকো !
খুশির পালক উড়তে থাকে মনে , হারিয়ে যাওয়া বনপথের বাঁকে ;
দু হাত দিয়ে জড়িয়ে থাকি আমি সেই যে আমার ছেলেবেলার মাকে !
কোথায় আমার পদ্য তিতাস ! ময়না , শালিক , তিতির পুরের ছুটি —
হয়তো আমি-ই এখন আবার শোনো , ভোর বেলা রোজ পাহাড় চূড়ায় উঠি !
কেউ কি তাকাও একটি বারও ? ভাবতে ভাবতে সাতটি পাখির শিসে ,
পথ হারিয়ে ওদের সাথে আমি , হঠাৎ করেই কখন যে যাই মিশে ।
কী যে মধুর সুর ছড়িয়ে তারা , আপন করে সবাই কাছে ডাকে ।
দু হাত দিয়ে জড়িয়ে থাকি আমি সেই যে আমার ছেলেবেলার মাকে !
কোথায় আমার পদ্য মাদল ! সাঁওতালী গান , পাহাড়তলির বাঁশি —
এই যে বুকে ছড়িয়ে আছে দ্যাখো , রূপকথা আর কুরচি ফুলের হাসি !
সবাই ছড়ায় টাপুর-টুপুর খুশি । মোহর দুপুর নামতা শোনায় দুলে !
দোলায় কে যে ছবির ভুবন খানি ? গভীর নেশায় পথ গুলো যাই ভুলে !
পথ হারাবো কেমন করে আমি ? পথ যে শুধুই ছবির ভুবন আঁকে !
দু হাত দিয়ে জড়িয়ে থাকি আমি সেই যে আমার ছেলেবেলার মাকে !

৪। মাথা

কি পারো কি ? কি পারো কি ? কিছুই পারোনা যে !
নেই কোনো মান , নেই কোনো হুঁশ । খুব তুমি খুব বাজে !
না পারাটাই তোমার কাছে সহজ বনে গেছে !
কি করে আর রইবে তুমি দোলনা দেশে বেঁচে !
হাড় জির জির তোমার দেহে বসুক আঁধার এসে !
যাও ভেসে যাও , এবার কবি তোমার অলীক দেশে — !
আমরা ওড়াই মেধার মগজ । আমরা ঘোরাই লাঠি !
চাইনা রূপোর রূপকথা পুর ! চাইনা সোনার কাঠি !
তাকাইনা কেউ গাছের দিকে , ছুঁইনা রোদের হাসি !
মেধার মগজ ছড়াই পাড়ায় আমরা ভুবন বাসি !
এইতো তোমার কবির জীবন ! জমাও হেলা খালি !
ফুরায় তোমার সকল খেলা । চোখেও পড়ে কালি !
আমরা পারি । আমরা পারি । আমরা অনেক কিছু — !
নেই ক্ষমতা ! দু-হাত আকাশ ! কবির মাথা নিচু !

৫। ঘুম

আমি দুললাম মেঘনা পাতায় । আমি ডুবলাম জলে ।
গান গেয়ে যায় কবিতা দেশ । গান গেয়ে পথ চলে — ।
বাউল সাগর আগুন দিলেন । হেসে বললেন ওহে ,
গুন টেনে যাও । গুন টেনে যাও । শুধু বাঁচবার মোহে !
ছবি আঁকলাম । উড়িয়ে দিলাম । উড়তে উড়তে তারা —
দুলিয়ে দিলো আমার বুকে আকাশমনির চারা !
আকাশ আমার । আকাশ আমার । হাজার বছর শেষে — ।
কেউকি নেশায় পড়বে ছবি ? কেউকি হাওয়ায় ভেসে —
বলবে আবার ও শিউলি দ্বীপ ! তোমায় খোঁজা বাকি !
ভাবতে ভাবতে পাথর পুরের পথিক হতে থাকি !
পাথরে রাত । পাথরে রাত । পাথরে রাত পড়ে ।
কিশোরী তুই জাগাস আমায় হাজার বছর পরে — !

৬। ছুট

ভোর হয়েছে , ভোরের আলোয় আকাশ ঘুড়ি ;
নুপুর পরে দোলায় হাতের মোহর চুড়ি ।
বুকের ভাষা বিজন সুতোয় আবার জুড়ি ।
এখন তুমি করছো কিগো চাঁদের বুড়ি ?
ঘোড়া ছুটছে– ঘোড়া ছুটছে– ঘোড়া ছুটছে —
ভোর হয়েছে , ভোরের আলোয় কদম বাঁশি ;
হৃদয় জুড়ে ছড়ায় সবুজ দিনের হাসি ।
বাতাস যেন বাজায় খুশির ঝাঁঝর – কাঁসি ।
এখন তুমি করছো কিগো পারুল মাসি ?
ঘোড়া ছুটছে— ঘোড়া ছুটছে— ঘোড়া ছুটছে—-
ভোর হয়েছে , ভোরের আলোয় পালক তুলি ;
সুজন দ্বীপে সাজায় স্মৃতির দুপুর গুলি ।
পাতার ডাকে বাউল মনের দুয়ার খুলি ।
এখন তুমি করছো কিগো কুমোরটুলি ?
ঘোড়া ছুটছে– ঘোড়া ছুটছে— ঘোড়া ছুটছে—
ভোর হয়েছে , ভোরের আলোয় কিশোর পাড়া ;
দোলায় বুকে ক্ষীরের পুতুল , গোলাপ চারা ।
পাহাড় থেকে গড়ায় মেঘের বিমল ধারা ।
এখন তুমি করছো কিগো কুসুম তারা ?
ঘোড়া ছুটছে— ঘোড়া ছুটছে — ঘোড়া ছুটছে —-
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।