• Uncategorized
  • 0

গল্পে চয়ন্তিকা রিকু পাল

অর্ণা ? আমার টাই কোথায়?
আসছি ! আরে একসাথে ই তো রেখেছিলাম।
উফফফফফ্ টাই-ই খোজার নাম করে এসব,
আরে ছাড়ো ।। অফিসের দেরি হয়ে যাবে যে।
এই দেখেছো এখানেই রেখেছি ,দেখতে পাচ্ছো না।
ছাড়ো আমি বেঁধে দিচ্ছি।
অংশুমান :-তুমি না থাকলে যে কী হতো?
অর্ণা – উননননহহহ!!! সকাল সকাল ঢং।
আরে ৮টা বেজে গেলো যে,এই নাও টিফিন জলের বোতল।
অংশুমান- সকাল সকাল কে বলে ভেজা চুলে আস্তে!! তোমার জন্যৈ লেট হই।
অর্ণা – আরে লক্ষ্মী টি সাদা জামাই ,সিন্দুর লেগে যাবে ছাড়ো ছাড়ো।।
পিপ পিপ!!!!
গাড়ি এসে গেছে
টাটা অর্ণা বাইরের কলাপসিবল টা তালা দিয়ে রেখো।।
অর্ণা -হুম!!
কলিং বেল টা বাজলো !অর্ণা ছুটে দরজায় , আবার অংশু কিছু ভুলেছে।
দরজা খুলে ! অর্ণা মিত্র? রেজিস্ট্রেশন করা চিঠি।
খাম টা দেখে অর্ণা ভাবতে লাগলো কিছু একটা।
বেডরুম থেকে মুঠোফোন টা বাজছে। অর্ণা? ত্রিশ হাজার টাকাটা FRD র ওটা ড্রয়ারে ঢোকাতে ভুলে গেছি তুলে রেখো।
অর্ণা হুম।
ব্যালকানি তে পিটুনিয়া ,জিনিয়া,টাইম ফুল,কাঠ গোলাপ ,কত রকমের গাছ লাগিয়েছে অর্ণা নিজে হাতে। এই গোটা ঘরের মধ্যে অংশু ও অর্ণা দুজনেরেই এই জায়গা টা খুব পচ্ছন্দের।
কত পাখি আসে সকালে।
দুপুরে একা খেতে অর্ণার একদম ভালো লাগেনা। তাই অংশুর সাথেই খেয়ে নেয় ।
সারাদিন অনেক কাজ থাকে কচিকাঁচাদের দেখাশোনা ,ঘর পরিষ্কার । বিকেলে র টিফিন বানানো। সব একা হাতের কাজ।
বেলা প্রায় ১টা মুঠোফোন এ আবার ফোন।
বাবু কি করছিস?মা এই তো কাজ করছি,কি রান্না করেছিস ?শুক্তো,আলোপোস্ত।মাছ ভাজা। তোমার জামাই তাই খেয়ে তো গেলো।
আচ্ছা বাবা রাখি এখন সাবধানে থাকিস ।।গেটে তালা দিস মনে করে দিনকাল খুব খারাপ তো!
ফোন টা নামিয়ে রাখার সাথে সাথেই চোখটা অর্ণার চিঠির ওপর গেলো।।
বাদামি খামে আহাআ কি মিষ্টি একটা গন্ধ বেরোচ্ছে খুব চেনা গন্ধটা।
একি । এতদিন পরে আবার এসব কেনো।এতো চেনা হাতের লেখা “অতৃণ বন্দোপাধ্যায়”? আজ হঠাৎ কি মনে করে? আমাদের নূতন বাসার ঠিকানা জানলো কি করে?
অর্ণা মাথাটা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।
“প্রিয় অর্ণা”!
তুমি বলে ছিলে সম্পর্কে র শুরু তে কোনদিন আমায় ছেড়ে যাবেনা,অসৎ হবেনা, কারো সাথেই বিয়ে করবেনা।
হ্যাঁ আমি বন্য ছিলাম তুমি থাকাকালীন ও অনেক মেয়ের সাথেই দেখা করেছি। কিন্তু কখনো তোমাকে ঠকাইনি।
অফিসের কাজ সত্যিই থাকতো তখন তোমাকে সময় দেওয়ার কথা মনে এলেও মাথাতে আসেনি ।আজ তুমি চলে গেছো এখন সব আছে সময়,অফিস,টাকা , কিন্তু বিশ্বাস করো এখন সব থাকলেও কারো সাথেই কথা বলে আমি শান্তি পাই না।
অর্ণা চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ছে,
অর্ণা কেঁদোনা প্লিজ, আমি এখন একজন এর সাথে সম্পর্ক এ আছি কিন্তু সে তোমার মতো বোঝেনা আমাকে,।
অর্ণা যাওয়া র আগে কেনো চলে গেলে বলে যেতে পারতে।এখন ও তোমার গলার গানটা কানে বাজে সময় পেলেই শুনি “তুমি রবে নীরবে”
অর্ণা চুপ করে চিঠি হাতে দাঁড়িয়ে।
শেষ কয়েক বছর এর ব্যবহার গুলো যেনেও মনে পড়ে গেলো।
অতৃন আসবে প্লিজ কলেজ ছুটি হয়েছে বাস বন্ধ এদিকে প্রায় সন্ধে হয়ে গেলো।
আমি অফিসে আছি অর্ণা ।আর তোমার বাবা কি আমায় রেখে গেছেন এই করতে।
অর্ণা ফোন টা নামিয়ে রাখে ঢাকুরিয়া থেকে সোদপুর অনেক কিছু করে পৌঁছলো ওহহ মা এটা অতৃণ না? এখানে ফুচকা খাচ্ছে বান্ধবী দের নিয়ে বাহ অতৃন ?? তুমি তুমি ভুল বুঝছো অর্ণা এটা অফিস ফেরত বন্ধুদের সাথে দেখা হলো।।
অর্ণা কিছু না বলে বাড়ি ফিরলো ।মা বললো কিরে এত দেরি? বাস ছিলনা মা ।
অতৃন পৌঁছে দিলো।
আয় ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নে
অর্ণা ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়লো, গত কয়েক মাস হতে চললো অতৃন কে দেখেনি ,রোজ ই অশান্তি হয় ,ওই ধর কাঁচি ধরে আছি।
অতৃন অফিস ফেরত ক্লান্ত অনলাইন নাহলে ঘুমতে ব্যাস্ত অর্ণা রাতের দিকে ফোন করলেও ঝাড় খাই।
সেদিন অনলাইন একটি মেয়ে তুমি অর্ণা গাঙ্গুলি? অতৃন তোমার বয়ফ্রেন্ড? হম!
তুমি কে ওর ? অফিস কলিগ!
ওর সাথে তোমার কতদিন এর সম্পর্ক ? অর্ণা-মানে আপনি কে এসব জিজ্ঞেস করার? কয়েকটা ছবি চলে এলো!! ইসসসসসস অতৃন !!!!!!
কি এসব? ।।
ফোন করলেও এখন সব সময় ফোন টা ব্যাস্ত থাকে,রাতে ও তিনটে অবধি জেগে জেগে ব্যস্ত ,অর্ণা ফোন করলেও খুব ঘুম পাচ্ছে।
এগুলো কি অতৃন? তুমি কি চাও? সারারাত জেগে ফেবু করো আমার সাথে কথা বলার সময় এত অভাব সময়ের? অর্ণা দেখো আমি এত সময় দিতে পারবোনা আর তুমি এইভাবে spy giri করোনা রাত জেগে জেগে ঘুমোও! বাই অর্ণা ।লাবু।।।।
অরনা সার রাত কান্নাকাটি করে ডিসিশন নেয় আর নয়।
অতৃন কে আবার ফোন করে ! প্লিজ সম্পর্কটা ভেঙে যাচ্ছে বাঁচা ও প্লিজ ।
অতৃন -যে যাওয়া র সে যাবেই, আর শোনো আমার ও ভালো লাগেনা এই সব সময় ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস নেওয়া.oh arnah .we r not married couples ..so take a time!আমার ও অসহ্য লাগছে।।
আমি বন্য ই আমার এই বিয়ে থা সংসার নিয়ে ভাবার সময় নেই।
আর গেঁয়ো ভূত হয়ে না থেকে একটু নিজের মতো বাঁচো আমাকে ও বাঁচতে দাও।।।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।