• Uncategorized
  • 0

কবিতায় যশোধরা রায়চৌধুরী

যশোধরা রায়চৌধুরী কবি ও গদ্যকার। বর্তমানে ভুবনেশ্বরের প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্টেন্ট জেনারেল।

পাপ

ধর্মাবতার, কবিতা লেখার মত পাপ আমি কখনো করিনি
পাপিষ্ঠের চোখ নিয়ে কখনো তাকাইনি পৃথিবীর দিকে
অপাপবিদ্ধতা ছিল আমার নিজের তরবারি
প্রেমিকের মত আমি কখনো দেখিনি বিপ্লবীকে
আলো তুলে ধরিনি কখনো , স্ট্যাচু অফ লিবার্টির মত
কেবল রাত্রির গভীরে
ফেলে গেছিলাম দুই ফোঁটা অশ্রু, যখন আমার
চেনা সব কবিদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বধ্যভূমিতে
সেই যদি অপরাধ হয় আমি অপরাধী ধর্মাবতার

এই সব রান্নাঘর কথকতা

সামিন নোসরত এক ইরানি মেয়ে
অত্যধিক তন্বী হবার কোন বাসনা পোষণ করেন না
খিদে পেলে খান
আইসক্রিম অথবা চিজ অথবা মাখন রসিয়ে রসিয়ে স্বাদ করেন
জীবনকে ভালবেসে বাঁচেন…
আমেরিকায় থাকেন, ফুড শো হোস্ট করেন।
আজ আমার কাছে উনি এসেছেন
অন্তর্জাল বাহিতা এক মাতৃমূর্তি
আমাকে হাতে ধরে শিখিয়েছেন পোলাউয়ে ঘি ঢালতে
পোলাউয়ের তলাটা মচমচে লালচে করে নামাতে হবে
মুরগির রোস্ট চুল্লির পেছনে ঠেলে দিতে দিতে
উনি বলেছেন দিনান্তে ঘরে ফিরে রেঁধে খেতে হয়
প্যাকেট খুলে যা তা মুখে পুরতে নেই
প্রতিটি সব্জিতে আছে আত্মা
প্রতিটি শস্যে আছে আত্মা
অন্নই ব্রহ্ম
আমাদের প্রতি খাদ্যের চাই আদর, ভালবাসা
কণা কণা যত্ন
সামিন নোসরত এসেছেন আমার মসিহা হয়ে
আজ একাকি জীবনে আমি মন দিয়ে কষাই মাংস
আর ফালি ফালি কুমড়োর ভেতরে গুঁজে দিই আমার মনোবাসনা।

চিনের মেয়ে সি এন লিজিকি
প্রকৃতির কোলে রান্না করে ভিডিও দেন
এই সেই প্রকৃতি যা আমার মা ঠাকুমা দিদাদের
বা তার আগের প্রজন্মের
কাঠের বারকোশে কেটে রাখা হচ্ছে ফল।
আনন্দের সঙ্গে বানানো হচ্ছে পিঠে
কাঠকুটোর জ্বাল দিয়ে বিশাল উনুনের ওপর
বসে আছে কালো কুচকুচে লোহার কড়াই
উষ্ণতার মধ্যে রান্না হচ্ছে শীতের ফসল
পরিবার রচে উঠছে তার আশেপাশেই
মাটিতে ছড়ানো বেছানো শুকনো শস্যে
বেতের চুবড়িতে কুলোতে ধামাতে ছড়ানো ফলে ও ফসলে
আবার সেই রং ধরল
লিজিকি আমাদের দেখালেন সবুজ শ্যামলিমায় ভরা ক্ষেত থেকে
পটাপট ছিঁড়ে নেওয়া ঝিঙে বা ঢেঁড়শের বৈদগ্ধ্য
আমাদের ফিরিয়ে দিলেন শৈশব
ঝিঁঝির ডাক
ও জলপ্রপাত সমেত
একটা আস্ত রান্নাঘরও।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।