• Uncategorized
  • 0

কবিতায় গৌতম কুমার গুপ্ত

দাম্পত্য 

আমার ছেলে সম্যক দেখেছে।দেখছে আরো অনেক কিছু।
বউ জানালো ওর স্বামীর জন্মদিন ছিল গতকাল। ওর মানে রেখার। অবাঙালী বিহারী সম্প্রদায়ের দম্পতি ওরা।
বছর চারেক হল ওদিকের ফ্ল্যাটে এসেছে।বেশ হাসিখুশি লাগে রেখাকে।ছাদে জামাকাপড় মেলতে আসে। তারই ফাঁকে আমারও পলকের দেখা।দেখতে ফরসা,সুন্দর।কমবয়সী।
মাঝে মধ্যে বউকে দেখেছি ওর সঙ্গে গল্পগুজব করতে।এ ছাদ থেকে ওই ছাদের কথাবার্তা।বউ হিন্দী জানে না।রেখা আবার বাংলা জানে না।তবু আকারে প্রকারে দুজন দুজনকে বুঝিয়ে ছাড়ে।
ইদানিং রেখা আর স্বামীর কলহ বিবাদ বাড়ছে।তর্কাতর্কি।তুমল ঝগড়া।আবার প্রেম আবার ঝগড়া।চলতেই থাকে।
ছেলে একদিন বললো মাকে,জানো মা গতকাল মাঝরাতে ওদের ঝগড়া হয়েছে আবার।রেখা অান্টিকে মারধর করছিল আংকেল। চড়চাপড়,জুতো ছোঁড়াছুড়ি হচ্ছিল।
ছেলেরে সামনে পরীক্ষা। রাতজেগে এখন পড়াশুনো করছে।
পরের দিন সকালে দেখলাম ওদের জানলা কপাট বন্ধ।দশটা পর্যন্ত খোলে নি।
বউ এসে জানালো,গতকাল ওদের বিবাহবার্ষিকী ছিল।নেমন্তনের খাওয়া দাওয়া ছিল।নাচ -গান- বাজনাও হয়েছে।রেখা নাকি খুব নেচেছে শুনলাম।
আমি বললাম,তাহলে ঝগড়া মারধোর হবে কেন?
শুভদিন একটা।
বউ দু হাত ছড়িয়ে দিয়ে মুখভঙ্গী করে প্রস্থান করলো।বুঝলাম,এটাই নাকি এখনকার দাম্পত্য।
পেপারটা টেনে নিয়ে পড়তে শুরু করলাম।শহরে লকডাউন চলছে।গৃহবন্দী সবাই।জীবন থেমে থাকে না।তবু জীবন চলছে।
একবার পড়ার ফাঁকে দেখলাম,রেখাদের জানলা কপাট খুলেছে।বউকে জানালাম ব্যাপারটা।
বউকে দেখালাম, ওই তো রেখা রান্না চাপিযেছে।তবে যে গতরাতে ওদের ঝগড়া মারামারি….
বউ আবার সেই হাত দুটো ছড়িয়ে আগের ভঙ্গীতেই কাঁধ শ্র্যাগ করে আমার মুখের কথাটাই এবার সরাসরি জানালো…. বুঝলে নটবর,এটাই এখনকার দাম্পত্য।
আমার মুখে কথা সরছিল না।আমি বললাম,কই আমাদের মধ্যে তো আর………..
বউ মুচকি হেসে গৃহকাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।
আমার ছেলে সম্যক এটাও দেখেছে।দেখছে আরো অনেক কিছু।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।