দিন যায় না জল যায়…দেখতে দেখতে কয়েক মাস কেটে গেল শহরে। প্রথমবারের মতো ওরা শহরে এসে কিছুদিন বিভ্রান্ত ছিল, এখন অনেকটাই সয়ে গেছে। কুপিল্লার কাজ গোডাউনের মালের হিসেব রাখা। বড় বড় বাক্সে কী মাল আসে, কার কাছেই যা যায় এসব ওর জানার কথা না, জানতেও চায়নি ও। শুধু কাগজ মিলিয়ে হিসেব রাখে মাল আনাগোনার। ওর সঙ্গেই ওর মতো বয়সী আরেকটি ছেলে কাজ করে, ম্যাথিউজ ওর নাম। দুচারদিনেই বেশ বন্ধুত্ব জমে উঠেছে ওর সঙ্গে কুপিল্লার। ও একাই থাকে স্টাফ কোয়ার্টারে। ওর ফ্ল্যাটের চেয়ে কিছুটা দূরেই। কুপিল্লা বিদ্যাকে ম্যাথিউজের কথা বলে প্রায়ই বাড়ি গিয়ে। একদিন বিদ্যা বলল, ‘এত বন্ধু হয়েছে যখন, একদিন তো নিয়েও আসতে পার ওকে। নিমন্ত্রণ করে খাইয়ে দেব। একা থাকে, খেতে বললে খুশি হবে’। কুপিল্লাও এককথায় রাজি। এক রোববারে এলো ম্যাথিউজ। আর সেই শুরু। খুব সহজে মিশে যেতে পারে ও। ফলে প্রায়ই আসাযাওয়া করতে থাকে ঘরের ছেলের মতো। বিদ্যাও আড়ম্বরহীন, কুপিল্লার তো একমাত্র দোস্ত, ফলে তিনজনের আড্ডা জমে উঠতে সময় লাগেনি।
রানীর মুখোমুখি হতে হয়েছে গৌরাম্মাকে আবার। একান্তে কথা বলতে চেয়েছেন উনি। গৌরাম্মার বুকের ভেতরে এক অজানা ভয়, আর শঙ্কা ছোটাছুটি করছে। রানীর ভীষণ এক ব্যক্তিত্ব আছে, ওঁর চোখের দিকে তাকালে ভয়ে বুক কেঁপে ওঠে কেন কে জানে। মনে হয় উনি বুঝি মনের ভেতরে কী চলছে সব দেখতে পান। মিথ্যে কথা বা কিছু গোপন করা খুব কঠিন কাজ ওঁর কাছে। তবুও তো লুকোতে হয়! নিজের মনের বিরূপ ভাবনা, ক্রোধ, ঈর্ষা, সবই লুকিয়ে ফেলতে হয়। কিন্তু মনে হয় রানী বোধহয় বুঝে ফেলেছেন! এইসব ভাবনা নিয়ে রানীর সামনে এলো গৌরাম্মা। রানী মূলত দলিপের পার্থশায়ার প্রাপ্তি বিষয়ে আলোচনা করলেন ওর সঙ্গে। আলোচনা বলা ভুল, একতরফা নিজের সিদ্ধান্ত জানালেন। গৌরাম্মা মন দিয়ে শুনলো পুরোটা। কোন মন্তব্য করল না। ওকে চুপ করে থাকতে দেখে রানী এবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী ব্যাপার? তুমি কিছু বলছ না যে! তুমি কি খুশি নও এই সিদ্ধান্তে?’ এবার গৌরাম্মা সরব হল। ব্যস্ত হয়ে বলে উঠল, ‘না, না, খুশি হব না কেন? এ তো খুবই আনন্দের বিষয়’। ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটল ভিক্টোরিয়ার। ‘তুমি তো আমার মেয়েই। অনেক আদরের। আর দলিপও আমার বিশেষ স্নেহের পাত্র। তোমরা ভাল থাকবে, সুখে থাকবে, এর থেকে বেশি আমার আর কিছু পাওয়ার নেই। আমি ভেবে রেখেছি, যদিও এখনও সিদ্ধান্ত ফাইনাল করিনি, তোমাদের বিয়ে দেব। আর এতে তোমরা সুখীই হবে আশা করি’। রানীর কণ্ঠে যেন সেই আদি, অকৃত্রিম মাতৃত্বের সুর। এতদিনে তাঁর অষ্টম সন্তান লিওপোল্ড কিছুটা বড় হয়েছে। এই সন্তান জন্ম দেওয়ার সময়ে তিনি ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করেছিলেন ব্যথা নিবারণের জন্য। এর ক্ষতিকর দিক সম্বন্ধে না ভেবেই এর পরে রানী নবম ও অন্তিম বারের জন্য মা হয়েছেন। প্রত্যেকবার মা হওয়ার পরে রানী ডিপ্রেশনে চলে যান। গভীর অবসাদে ডুবে থাকেন যখন তিনি, রাজকার্যের ভার সামলান তাঁর প্রিয় স্বামী, অ্যালবার্ট। সেই সমস্ত কাটিয়ে এখন রাজকার্যে মন দিয়েছেন রানী। তাই ব্যস্ততা রয়েছে তাঁর। বেশিক্ষণ বসলেন না। তিনি এবার আদেশের সুরে বলে গেলেন, ‘আজ রাতের বল্-এ দলিপ আর ওর এক অ্যামেরিকান কর্নেল বন্ধু স্পেশাল গেস্ট হিসেবে নিমন্ত্রিত হয়েছেন। তুমি সেই ভাবে নিজেকে প্রস্তুত করবে। এ বিষয়ে নতুন করে তোমাকে বোঝানোর কিছু নেই আমার’। রানী চলে গেলেন দ্রুত। তাঁর যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে গৌরাম্মা কেমন উদাস হয়ে পড়ল। কেন জানি আজকাল এই সাজগোজ, বল্, সুরাপান, কিছুই তার আর ভাল লাগে না। সবই কেমন মেকি মনে হয়। মনের আনন্দ পায় না আর এতে। সেই একই ভাবে সেজেগুজে নিজেকে মক্ষীরানীর মতো পুরুষের সামনে মেলে ধরা—এসবে তার নাম, যশ বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু সে কেমন জানি ঝিমিয়ে পড়ছে ভেতরে ভেতরে। সেই উৎসাহ, উদ্দীপনা আর বোধ করে না।
সেদিন গৌরাম্মা আবার শাড়ি পরেছে। ও বোঝে, রানী বিশেষ সাজসজ্জা বলতে কী চান। সেই মতো, নিজেও মুকুটে, অলঙ্কারে ভারতীয় রানীর সাজে নিজেকে প্রস্তুত করল ও। আয়নায় নিজেকে দেখে সন্তুষ্ট হওয়ার পরেই ঘরের বাইরে পা দিল। আজ ওর বল-এ যেতে ইচ্ছে করছে না যদিও। মনে হচ্ছে, মুখার্জি স্যারের দেওয়া বইগুলো উল্টেপাল্টে দেখলে ভাল হত। বইয়ের মধ্যে নিশ্চই কোন গুপ্তধন আছে যার খোঁজ সবাই পায় না। স্যার পেয়েছেন বলে সদাই এমন আনন্দে থাকেন, সুস্থির থাকেন। ওর পাওয়া হয়নি। আসলে সন্ধান করার ইচ্ছেটাই তেমন জাগেনি তখন। তখন এই বাইরের চকচকে জগতটা ওকে হাতছানি দিচ্ছিল। আর এই জগতের মধ্যে এসে ও আজ বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। আর কোন রঙ, রস, রূপ অধরা পড়ে নেই। সেই একঘেয়ে নাচ, গান আর সুরা, হৈচৈ, মেকি স্তুতি, বিলাস, আড়ম্বর ওকে বিরক্তি জোগাচ্ছে এখন। মনে হচ্ছে ছুটে চলে যায় নিজের দেশে। নিজের সেই ঘরটা ওকে আজ টানছে। বেনারসের বাড়ির কথা ওর স্পষ্ট মনে আছে। কত আলো, কত রোদ, উত্তাপ, ঝলমলে আকাশ, আর বৃষ্টি, বৃষ্টি, বৃষ্টি……শীতের সময়ে শীত আসত বটে, তবে তখন এখানকার মতো এমন দমবন্ধ লাগত না। শীতের রোদে পিঠ দিয়ে বসে ওরা সবাই কত গল্প করত। খেলা করত। এখানে শুধুই বড় প্রাসাদের ভেতরে কুয়াশাচ্ছন্ন দিন আর ঘোলা রাতে ডুকরে মরা। এইসব ভাবতে ভাবতে ও পৌঁছে গেছে বলরুমে। ততক্ষণে অতিথি সমাগম শুরু হয়ে গেছে। রানী আসেননি এখনও। মিউজিক শুরু হয়েছে মৃদু লয়ে। টেবিলে টেবিলে জোড়ায় জোড়ায় মানুষের ঢল। গৌরাম্মা প্রবেশ করতেই জোরাল আলো জ্বলে উঠল। মিউজিক দ্রুত হল। মনে হল যেন এতক্ষণে প্রাণ ফিরে এলো এই বলরুমে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই রানী উপস্থিত হলে। তাঁর সঙ্গে দলিপ সিং আর তার বন্ধু। রানী সবাইকে দলিপের পরিচয় দিলেন—এই সুপুরুষ যুবাকে আমি আজ প্রিন্স অফ পার্থশায়ার ঘোষণা করছি। আপনারা প্রিন্সকে আমার পছন্দের মানুষ হিসেবে যোগ্য সম্মান ও আদর দেবেন, আশা করি। আসুন সবাই মিলে টোস্ট করি। সবাই উঠে দাঁড়িয়ে প্রিন্সকে সম্মান জানাল। বলরুম নেচে উঠল এরপর। দলিপ সিং এরপর গৌরাম্মার কাছে তার বন্ধুকে নিয়ে এলো পরিচয় করানোর জন্য। এবং পৃথিবীর আশ্চর্য ঘটনাগুলোর মধ্যে আরও একটি আশ্চর্য ঘটনা ঘটে গেল তখনই। গৌরাম্মার সঙ্গে আবার দেখা হবে, এ বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন ক্যাম্পবেল। তিনি এখন কর্নেল ক্যাম্পবেল। ভারিক্কি হয়েছেন কিছুটা। পদাধিকার বলে এবং বয়সের ভারে। আর গৌরাম্মা বিন্দুমাত্র ভাবেনি যে আজ, এখানে ক্যাম্পবেলের সঙ্গে ওর আবার দেখা হতে পারে। দলিপের অসমবয়সী বন্ধুও সে হতে পারে! পুরনো আলাপের সূত্র ধরে আড্ডা জমে উঠল ওদের। দলিপের সঙ্গে অতিথি অভ্যাগতরা ক্রমাগত পরিচিত হতে আসছেন, ফলে সে গৌরাম্মা ও ক্যাম্পবেলের সঙ্গ দিতে পারছে না। এই সুযোগ ক্যাম্পবেল হাতছাড়া করলেন না তাই। বল-এ নামলেন দুজনে একসঙ্গে। গৌরাম্মা কোমর বেষ্টন করল তার হাত একটু বেশিমাত্রায় ঘনিষ্ট হয়ে। দুজনে খুব কাছাকাছি এসেছে দেখে দলিপ মনের ভেতরে তীব্র হুল দংশনের জ্বালা অনুভব করল। যদিও মুখে সেই ভাব প্রকাশ করতে পারল না। গৌরাম্মার যদিও সেদিকে খেয়াল নেই। ক্যাম্পবেলেরও হুঁশ নেই আজ। দুজনেই নিজেদের নিয়ে মগ্ন হয়ে পড়েছে। বর্তমান গৌরাম্মার শরীরে যৌবন আরও ঢলঢল করছে, রূপের জোয়ার লেগেছে চোখেমুখে। ক্যাম্পবেল যত না গৌরাম্মাকে দেখছিল, তার থেকেও বেশি দেখছিল ওর গয়নাগুলোকে। মনে মনে এরই মধ্যে এই গয়নার মূল্য সম্বন্ধে ভাবছিল আর শিহরিত হচ্ছিল উত্তেজনায়। বেশ কয়েকবার সে গৌরাম্মাকে তার রূপ এবং অলঙ্কারের প্রশংসা করেও ফেলেছে। আর গৌরাম্মাও যেন আজ এই মানুষটির ওপর অনুরক্ত হয়ে পড়েছে বেশি করে। তার এক মন বলছে, এই সেই মানুষ, যার ওপর তুমি ভরসা করতে পার, নির্ভর করতে পার। আর এক মন বলছে, এই মানুষটি কিন্তু তোমার থেকে দ্বিগুণ বড় বয়সে! ভেবে দেখ!
কুপিল্লার যেন কী একটা হয়েছে! বিদ্যা অত বোঝে না। তবে ম্যাথিউজ এলে আগের মতো কুপিল্লা মন খুলে আড্ডায় বসে না, হুঁ হাঁ করে কাটিয়ে দেয়। তাল কেটে গেলে আর কতক্ষণ আড্ডা থাকে? ধীরে ধীরে ম্যাথিউজেরও আসাযাওয়া কমতে থাকে। কুপিল্লার কোন হেলদোল নেই তাতে। জিজ্ঞেস করলেও এড়িয়ে যায়। একমাত্র রাতে বিছানায় যেন বেশি বেশি করে পৌরুষ দেখায়। যেন এক হিংস্র উন্মাদ ভর করেছে সেই নরমসরম কুপিল্লার ওপরে। বিদ্যা কিছু না বুঝে শুধু মনে মনে গুমরোয়।
সেদিন নিজের প্রাসাদে, নিজের ঘরে ফিরে এসে গৌরাম্মার মন হঠাতই মোড় নিল। দলিপের সঙ্গে সে আর বাক্যালাপে যায়নি বিশেষ। ক্যাম্পবেলের শরীর, তার উষ্ণ নিঃশ্বাস, হাতের পাতায় আলতো ঠোঁট ছুঁইয়ে দেওয়া, কোমরে বলিষ্ট হাতের বন্ধন, তাকে পাগলপ্রায় করে তুলল। সবথেকে আকর্ষণ করছিল ক্যাম্পবেলের কথার চাতুরি। তার উচ্ছাসপ্রবণ মন, তার দরাজ হাসি। এতদিনে পুরুষ মানুষের মন চিনতে আর বাকি নেই গৌরাম্মার। সে বুঝেছে, আগুন ওদিক থেকেও সমান তাপ ছড়াচ্ছে। ক্যাম্পবেলের সঙ্গে পরের সাক্ষাতের দিন নির্দিষ্ট হয়ে আছে তার। সে প্রস্তাব ক্যাম্পবেল নিজেই দিয়েছিল। আর কোনরকম ওজরআপত্তি না করে রাজি হয়ে গেছিল গৌরাম্মা। আর তিনদিন বাদেই ক্যাম্পবেলের সঙ্গে মিলিত হবে ও। রানীর সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি ও। আজ ও স্থির সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে মনে মনে। রানীর সমস্ত নির্দেশ ভয়ে ভয়ে মেনে নিয়েছে এতকাল। কিন্তু বিয়ের ক্ষেত্রে ও রানীর কথা মানবে না। নিজের দেশীয় এক রাজপুত্রকে সে মেনে নিতে পারবে না। আর সেও গোপনে খবর পাঠিয়েছে বাবার কাছে। বৃদ্ধ হলেও তিনি আজও চিক্কা বীরারাজেন্দ্র। তার তেজ এখনও কমেনি। বৃটিশ লালিত কন্যাকে তিনি কিছুতেই একজন দেশীয় মানুষের সঙ্গে বিয়েতে সম্মতি দেবেন না। হলেই বা সে প্রিন্স অফ পার্থশায়ার। একমাত্র এই একটাই লুকনো অস্ত্র আছে ওর কাছে। আর মহামতি রানীর সঙ্গে এই দিয়েই ওকে লড়াই করতে হবে। দলিপের সঙ্গে বিয়েতে সে কিছুতেই সায় দেবে না। তাতে যদি রানী জোর করে ওকে বিয়ে দিতে চান, আত্মহত্যা করতেও সে প্রস্তুত।
আয়নায় নিজের মুখোমুখি হল সে বিনা প্রসাধনে। ধকধক করে চোখ জ্বলছে ওর। দৃঢ় প্রত্যয় ওর সারা শরীরে। আয়নার ভেতর থেকে যেন প্রতিপক্ষ রূপী ওর ছায়া নয়, ওর স্বর নয়, অন্য এক ক্রাউনধারী, গাউন পরা রমণীর ছায়াচিত্র ফুটে উঠেছে।
কুপিল্লা ভাবে, এই হল নারীর মন। পদ্মপাতায় জলের মতো টলমল করে। সেও কি লক্ষ্য করেনি কিছু এতদিনে? কেন বিদ্যা ম্যাথিউজ এলেই আনন্দে অধীর হয়ে পড়ে, ওর চোখমুখ খুশিতে জ্বলজ্বল করতে থাকে। ম্যাথিউজ খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারে, সে পারে না—এইটুকুই দোষ তার, কমতি তার। তবে? বিদ্যা কি ওকে ভুলে চলে যাবে ম্যাথিউজের কাছে? ভাবতেই বুক কেঁপে ওঠে কুপিল্লার। চোখে জল আসে। সে কিছুতেই সহ্য করতে পারবে না সেই দিন! এর চেয়ে ম্যাথিউজের আসাযাওয়া বন্ধ করে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। একবারে তো মুখের ওপর ‘না’ বলা যায় না, তাই হাবেভাবে ওকে বুঝিয়ে দিচ্ছে কুপিল্লা। আর ওষুধে কাজও হয়েছে। আজকাল ম্যাথিউজ আর আসেই না। সেদিন রাতে বিদ্যাকে যেন আরও বেশি করে পেতে মন চাইছিল কুপিল্লার। অধিকার দেখানোর নেশা পেয়ে বসেছিল ওকে। কিন্তু বিদ্যা বেঁকে বসেছিল। শরীর ভাল নেই অজুহাতে পাশ ফিরে শুতেই, এক হ্যাঁচকা টানে নিজের দিকে ফেরাল কুপিল্লা। উফ! মাগো! কঁকিয়ে উঠল বিদ্যা। কুপিল্লার তখন মাথায় আগুন জ্বলছে। প্রায় জোর করে চেপে বসল ও বিদ্যার শরীরের ওপর। আর বলতে থাকল, ‘তুই আমার বউ। আমার সঙ্গে শুবি না মানে? তবে কি ম্যাথিউজের সঙ্গে শুবি? আমি কিছু বুঝি না, না? কেন সে এলে তোর আনন্দে বুক ভেসে যায়? তোদের মধ্যে কী চলছে, খুলে বল আজ আমায়! নইলে খুন করে ফেলব তোকে আজ!’
কুপিল্লার এহেন রূপ কোনদিন দেখেনি বিদ্যা। সেরাতে দাঁতে দাঁত চেপে সব হজম করেছিল বিদ্যা। পরদিন কুপিল্লা অফিসে বেরিয়ে গেলে, কাউকে কিছু না বলে ফিরে এসেছিল নিজের গ্রামে, বাপের বাড়িতে।