অফিসে গোস্বামীদা এসে ঠাকুর রামকৃষ্ণ আর মা সারদার ছবিতে প্রণাম করার পর ফ্রেমে বাঁধানো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি দাঁড়য়ে থাকা ছবিতে প্রণাম করে কাজ শুরু করেন। একদিন জিজ্ঞাসা করলাম রবীন্দ্রনাথ তো আধ্যাত্মিক পুরুষ নন, উনি সাহিত্যিক। তাকে প্রতিদিন ভক্তি ভরে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করেন কেন! এই শুনে তিনি হেসে বললেন
– ওরে ওনার কাছে আমি পরোক্ষ ভাবে ভীষণ কৃতজ্ঞ।
জিজ্ঞাসা করলাম, কীভাবে?
তিনি বলতে শুরু করলেন – স্কুলে কর্মশিক্ষার পরীক্ষা। স্যার একসঙ্গে দু-জন করে ডাকছেন। আমি আর এক বন্ধু ঢুকলাম। দু-একটা করে প্রশ্ন করার পর, স্যার ওই বন্ধুকে একটা গান গাইতে বললেন। ব্যাটা বেশ চালাক। দুম করে জাতীয় সংগীত গেয়ে দিলো। এবার আমাকে গাইতে বলায় চিন্তায় পড়ে গেলাম। কী গান গাই! হঠাৎ মনে পড়লো পাশের বাড়ির রুমিদি ছাদে উঠে যে গানটা গায়, সেটাই গেয়ে দিই। ব্যাস গেয়ে দিলাম – “নাগর আমার কাঁচা পিরিত পাকতে দিলো না …।” শুনে তো স্যারের চক্ষু চড়কগাছ। বলে, এই বয়সে এই গান। তারপর সারা স্কুলজুড়ে এই নিয়ে হাসাহাসি থেকে আরও কতকিছু। যাই হোক সেবার স্কুলে প্রথম হয়েছিলাম।
এই কথা শুনে আমিও হেসে ফেললাম আর রবীন্দ্রনাথের দিকে হাতজোড়ে প্রণাম করে বললাম – ঠাকুর, আমি গায়ক নই। তবে একটা গান অন্তত জানি …