চুক্তিপত্র (জনৈক বেকারের ডাইরি থেকে)
বিষন্ন বিকেল। উত্তরের আকাশটা ধরেছে। দু এক ফোঁটা বৃষ্টি হল। টালমাটাল সময়। চিন্তা হয়। এক একটা দিন এগিয়ে চলে বিয়ের দিকে। এই সময় বড্ড আলাদা। তেঁতুল পাতে মন ও মেঘ একসাথে। স্বপ্নতে রঙ লাগে। আমোদ আহ্লাদ শখ সাধ তারই প্রস্তুতি। কী দেব তোমায়! কী লিখব! নতুন মানুষ নতুন মুখ নতুন উঠান নতুন সুখ। কবে কী বলেছি মনে নেই। অকারণ দাবী সই। তুমি আমাকে বুঝবে। আমি তোমাকে বিশ্বাস করব। দুলতে দুলতে চলবে সংসার।
ঘুম পাবে। খিদে পাবে। কাঁথা আছে। ঘরে ভাজবে মুড়ি। কাঁচা লঙ্কা। বেসন ভাজা। ভিজে কলাই। টমেটো আলু মেখে মুড়ি দিবে। পেট ভরে খাব।
তারপর ভাত বসাবে। হাতের গুণে পাঁচ তরকারি। প্রতি রবিবার মাংস। রুটিন থাকবে গৃহস্থে।
রাতে জল ঢালা ভাত ঝোলা পোস্ত বেগুন পড়া রসুন দিয়ে চটকানো।
তারপর হাতমুখ ধুয়ে বিছানায়
খোশগল্প হবে। এমটিএস টা বেচে দিয়েছি। শিব পান দেড় টাকা। চাকরি পাচ্ছি না। কোনরকম চলছে। দাঁতের মাড়িতে কালো দাগ। রাজা খৈনী দু টাকা। লোডশেডিং এর খপ্পর। নাজেহাল জীবন। জল নেই আলো নেই চলবে এমন। জিনিস পত্রের দাম বাড়বে। বুদ্ধিজীবি চুপ থাকবে। তুমি হিসেব করে চলবে। এরই ফাঁকে আমি বেঁচে আছি প্রমাণ করব।
ভাবতে থাকবে তুমি
বয়স বাড়লে মানুষ কী খায়। কোথায় থাকতে পচ্ছন্দ করেন। প্রেম বিরহ হাসিঠাট্টা কি লিখেন। মিস কল মেসেজ সুইচ অফ কোনটা করেন।
অপেক্ষায় দিন চলতে থাকবে। ঋতু বদল হবে। ঠাণ্ডা হাত গালে দিবে। কোকিলের সাথে কুহু মেলাবে। হাতপাখা নাড়বে। ঝড়বৃষ্টি হবে। সাজুগুজু করবে। সময় মতো কাঁথা সেলাই চলবে।
যখন বিরক্ত প্রকাশ করে জানবে প্রেম কোথায়।
তখন বলব তুমি সুন্দর। তুমি সত্যি। তোমার সুমিষ্ট ছোঁয়ায় আমি মাতোয়ারা আর তখনই মেঘ গর্জন করবে। প্রেম ঝরতে থাকবে আমাদের উঠানে…….