কবিতায় স্বর্ণযুগে তনিমা হাজরা (গুচ্ছ কবিতা)

১|
আমি এক ঘরপোড়া গরু
সব কিছুতেই দেখি সিঁদুরে মেঘ,
পাশের বাড়ির ছেলে তুতেন খামেন
যখনই নিজেকে ভেবে বসে মিশরের রাজা,
বরফের কুচি দেন আমুন্ডসেন,
গেলাসে ঢাললে বেশি দুচার পেগ,
অনুসন্ধিৎসুর মতো চোখ করি সরু।।
২|
গালভরা জীবনের গালিচায় বসে,
আস্তিনে পদ্য লেখে মির্জা গালিব,
প্রকৃতকবিরা কখনোই এ পৃথিবীর মানুষ ছিল না,
শূন্যে তাদের নামে তাই স্বরধ্বনি ওঠে।
শায়েরীটি বয়ে আনে পিপিলিকা সেনা,
অক্ষরে অক্ষত কাঁচপোকা টিপ,
মথেরা ছড়িয়ে ডানা মধুকূট চোষে।।
৩|
একসাথে স্বাদ করি প্রেম,
একসাথে ছুঁয়ে থাকি দুরত্বের দড়ি
একসাথে বুঝে ফেলি দুজনেই একা
মধু ঢেলে বুজিয়ে রাখি আলবেলা ক্ষত।
মুখ্য ক্রিয়ারা সবই অসমাপিকা,
ঝুর ঝুর ঝরে পড়ে বালুমাপা ঘড়ি,
চলকে গড়িয়ে পড়ে যৌথ হারেম।।
৪|
যে দিলো তোমাকে জোনাকি,
সেও চাইছে বাড়াতে হাত,
তোমার ফুট ফুট আলোর ফুলকিতে
নিজেকে জড়িয়ে রাখে
তোমার অজান্তে সেও তোমারই মিতে,
একথা সে বলেনি তোমাকে, তোমার জন্য জাগে রাত,
তুমি তার তানপুরা গোপনে বাজাও, আনমনে কি??
৫|
ঠকতে ঠকতে এটাই জেনেছি, ঠকাটাই স্বাভাবিক,
ধারবাকি দিয়ে জীবনের শুরু
চিৎ হয়ে কবে উঠবো চিতায়
এটাই এখন চিন্তা।
বুদ্ধিমানের সরু চোখ গণিত লাভ তুলে রাখে খাতায়
ডাহা লোকসানে ভাঙে দুর্যোধনের ঊরু,
কুরুক্ষেত্র জুড়ে অট্টহাস্য করে সহস্র মৃত সৈনিক।।