• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে তনিমা হাজরা (পর্ব – ১২)

ছড়িয়ে জড়িয়ে

জানিনা আবহাওয়ার বিভিন্ন পরিবর্তন ও আধুনিক সার ও যন্ত্র নিয়ন্ত্রিত কৃষি ব্যবস্থায় এই ছড়া গুলির আর অত গুরুত্ব আছে কিনা। কারণ পরিবেশ ও প্রাকৃতিক বিভিন্ন পরিবর্তনের সাথে সাথে গণনাগুলিকে আবারও সংশোধিত এবং পরিমার্জিত করার নিশ্চয়ই প্রয়োজন । কিন্তু তবুও এর নিহিত কিছু টিপস বোধহয় আজও নিজস্ব যাথার্থ্য খুঁজে নেবেই।
(১)
উঠান ভরা লাউ শশা,
খনায় বলে লক্ষ্ণীর দশা,
চালভরা কুমড়োর পাতা,
লক্ষ্ণী বলেন আমি তথা।
(২)
লাউয়ের বল মাছের জল,
আইল অন্তর দশা, যার যেমন দশা।
(৩)
শোন রে বাপু চাষার ব্যাটা,
মাটির মধ্যে বেলে যেটা,
তাতে যদি বুনিস পটল,
তবে তোর আশা সফল।
বুনলে পটল ফাগুনে,
ফল বাড়ে দ্বিগুনে।
(৪)
বলে গেছে বরাহের পো,
দশটি মাসে বেগুন রো,
চৈত্র বৈশাখ দিবি বাদ,
ইথে নাই কোনো বিবাদ।
ধরলে পোকা দিবি ছাই,
এর ভালো উপায় নাই।
খরা ভুঁয়ে দেবে জল
সব মাসেই পাবি ফল।।
(৫)
খনা বলে, শুন, শুন,
শরতের শেষে মূলা বুন।
আখ, আদা পুই
এ তিন চৈত্রে রুই।
মূলার ভুঁই তুলা ( নরম)
কুশরের( ইক্ষু) ভুঁই ধুলা( ধৌত বা আর্দ্র)
(৬)
ছায়ার ওলে চুলকায় মুখ,
রোদ ডাঙ্গাতে তারে থুক,
নদীর ধারে পুঁতলে কচু,
গাছ বাড়ে তিন হাত উঁচু।
কচু বনে ছড়ালে ছাই,
তার বৃদ্ধির জবাব নাই।
ওলে কুটি ( ধানের কুটো), মানে ছাই,
এরূপে চাষ করোগে ভাই।।
(৭)
বৈশাখ জৈষ্ঠে হলুদ রো,
দাবা পাশা ফেলিয়া থো,
আষাঢ়ে শ্রাবণে নিড়ায়ে মাটি,
ভাদরে নিড়ায়ে করবে খাঁটি,
এর অন্যথায় পুঁতিলে হলদি,
পৃথিবী বলে, কিবা ফল দি।।
(৮)
তামাক বনে গুঁড়িয়ে মাটি,
বীজ পুঁতে দাও গুটি গুটি,
ঘন ঘন পুঁতো না,
পৌষের অধিক রেখোনা।
(৯)
যদি না হয় অঘ্রানে বৃষ্টি,
তবে না হয় কাঁঠালের সৃষ্টি,
হাত বিশেক করে ফাঁক,
আম কাঁঠাল পুঁতে রাখ।
এই দুই গাছ ঘন সবে না,
গাছ হলেও ফল হবে না।
(১০)
আগে পুঁতে কলা বাগ বাগিচা ফলা,
শোন রে বলি চাষার পো,
ক্রমে নারিকেল, পরে গো ( গুয়া বা সুপারি)
(১১)
সিংহ (ভাদ্র), মীন (চৈত্র) বর্জে,
কলা খাবে অর্জে।
রুইবি বটে খাবি নে,
কলাতলায় যাবি নে,
লাগবে তবে জুঁয়ে ( পোকা)
কলা পড়বে শুয়ে।
(১২)
তিনশ ষাট ঝাড় কলা রুয়ে,
থাক গেরস্ত নিশ্চিন্তে শুয়ে,
কলা গাছের কেটো না পাত,
তবে বৃদ্ধি, কাপড় ভাত,
নলেক (আট হাত) অন্তর
একহাত খাই ( গভীর)
কলাগাছ পোঁত চাষা ভাই।
শতেক ধেনু, হাজার কলা,
কি করবে রে আকাল শালা।
(১৩)
শোন রে বাপু চাষার পো,
সুপারি বাগে মান্দার থো,
মান্দার পাতা পড়লে গোড়ে,
ফল বাড়বে ঝটপট করে।
(১৪)
গো’ য়ে ( গুয়া বা সুপারি) গোবর,
বাঁশে মাটি,
আফলা নারকেলের শিকড় কাটি।
(১৫)
ধান গাছে শামুকের পা,
বনবেড়ালি ডাকে রা,
গাছে গাছে আগুল জ্বলে,
বৃষ্টি হবে খনায় বলে।
এর পরে আসবো প্রবাদে প্রবচনে বহুযুগ ধরে গেঁথে রাখা অমূল্য সব জ্ঞানী উপলব্ধির ছড়ায় ছড়ায়।।

চলবে

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।