দেহবণিক
পর্ব: ২
অজয় মণ্ডল এবং তার তিন শাগরেদ বেশ কিছু দিন হল এই চক্র চালাচ্ছে। অন্ধকারে কিছু একটা নড়ে উঠল আবার। আর ঠিক তার পরেই চারমূর্তি একে একে গাছের আড়াল থেকে বাইরে বেরিয়ে এল। অজয় মণ্ডলের হাতে ইমারজেন্সি ল্যাম্প। তবে সেটা নেভানো। সেই ইমারজেন্সি ল্যাম্পে দুটো ছোট আকারের টিউব লাইট লাগানো রয়েছে। সে এবার আলো জ্বালাল। তার পিছনে তার তিন সঙ্গী। ওরা কয়েক পা এগিয়ে এসে দাঁড়াল আজই কবর দেওয়া একটি সমাধির সামনে।
অজয়ের গলা শোনা গেল। নে চল চল। কাজ শুরু কর। হাতে সময় কম।
অজয় দাঁড়িয়ে রইল আর বাকি তিনজন মাটি কোপাতে শুরু করল কোদাল দিয়ে।
এভাবে কিছুক্ষণ সময় গেল। ওরা মৃতদেহ বের করে ফেলল কফিন খুলে। আর তখনই গাছের আড়াল থেকে অগ্নিভাস বাইরে বেরিয়ে এল। ধীরে ধীরে সে এসে দাঁড়াল অজয়ের পিছনে। তারপর রিভলভার বের করে সজোরে অজয়ের মাথায় বারি মারল বাঁট দিয়ে। অজয় জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে অগ্নি জ্বলন্ত ইমারজেন্সি ল্যাম্পটা মাটি থেকে কুড়িয়ে নিল। এখন তার ডান হাতে রিভলভার আর বাঁ হাতে জ্বলন্ত ল্যাম্প।
আকস্মিক এই ঘটনায় ওরা তিনজন একটু ঘাবড়ে গিয়েছিল। অগ্নিভাস হুঙ্কার দিয়ে উঠল, শুয়োরের বাচ্চা। মানুষের লাশ নিয়ে ব্যবসা করিস! লজ্জা করে না, বাঞ্চোতের দল? এত নোংরা মন?
অগ্নিভাস জ্বলন্ত ল্যাম্পটা ছুড়ে মারল চতুর্থ ব্যক্তির মুখ লক্ষ করে। অগ্নি আবার হুঙ্কার দিয়ে উঠল, টিউব লাইট খুলে পিছনে ঢুকিয়ে দেব, শালা। মনের অন্ধকার ঘুঁচে যাবে!
অগ্নি এগিয়ে গেল মাটিতে পড়ে থাকা ইমারজেন্সি ল্যাম্পটা তুলতে। যদিও লোকটির মুখে আঘাত করে মাটিতে পড়ে ল্যাম্পটা নিভে গিয়েছিল। আর এই সুযোগেই তৃতীয় লোকটি একটা ঢেলা ছুড়ে মারল অগ্নিভাসের চোখ লক্ষ্য করে। একেবারে মোক্ষম লক্ষ্যভেদ। অগ্নির মুখ থেকে একটা চাপা আর্তনাদ বের হয়ে এল। আর এই সুযোগে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় লোকটি মারল দৌড়। অগ্নিভাসের রিভলভার গর্জন করে উঠল, কিন্তু অন্ধকারে সে লক্ষ্যভ্রষ্ট হল। শুধু চতুর্থ লোকটা ভ্যাবলার মতো দাঁড়িয়ে রইল অগ্নির সামনে। আর তার ঠিক পাশেই অজয় মণ্ডল পড়ে রয়েছে মাটিতে।
অজয় মণ্ডল একজন দাগী অপরাধী। তার নামে একাধিক খুন-ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। তবে সব ক’টা অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। একবার বছর পাঁচেকের জন্য সে জেলও খেটেছে।
এবার অগ্নি অবশিষ্ট ব্যক্তিটির দিকে তাকাল। সে বেশ ভয় পেয়েছে, তা তার চোখ মুখ দেখলেই বোঝা যায়।
অগ্নিভাসের কণ্ঠস্বর শোনা গেল। কী বলেছিলাম? তোদের দিয়ে কবর খোঁড়াব। আর মাটি চাপা দেব তোদের বসকে। কীরে? মনে আছে?
— স্যার, আমি কিছু করিনি। আমি কিছু জানি না। আমি সবে দলে ঢুকেছি।
— দাঁড়া। আগে প্রতিশ্রুতি পালন করি। তারপর তোর রামায়ণ শুনব।
অগ্নি অচৈতন্য হয়ে পড়ে থাকা অজয় মণ্ডলের শরীরটা টেনে এনে গর্তের মধ্যে ফেলল। তারপর হাতে তুলে নিল কোদাল। এরপর সে মাটি চাপা দিতে শুরু করল। চতুর্থ লোকটি সভয়ে দেখতে লাগল অগ্নিভাসের কীর্তিকলাপ। অথচ সে একবারও পালানোর চেষ্টা করল না। পালানোর যথেষ্ট সুযোগ তার ছিল।
কাজ শেষ করে অগ্নি বলব, দেখলি তো! আমি কথার খেলাপ করি না!
চতুর্থ লোকটি এর কোনও উত্তর দিল না। অগ্নি আবার বলে উঠল, কী নাম রে তোর?
— স্যার, টোটন মান্না।
— হুম। এবার বল তো সব কিছু খুলে।
— স্যার, আমি সত্যিই কিছু জানি না।
— টেনে একটা লাত্থি মারব শুয়োরের বাচ্চা কোথাকার। ন্যাকাচণ্ডী! ভালোয় ভালোয় বল, বডি কোথায় পাচার করতিস তোরা? কারা কিনত? কিডনি, লিভার এসব কোথায় যেত? বল, বল।
— স্যার, আমি সত্যিই কিছু জানি না। দিন পনেরো হল এদের সঙ্গে মিশছি। এরা আমার সামনে বিশেষ কিছুই বলত না। আমার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখত সব কিছু। আমি নিজে থেকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, টেনে একটা লাথি মেরেছিল। শুধু এটুকু জানি, এরা একজনের হয়ে কাজ করত, বদলে মোটা টাকা পেত। এর বাইরে আমি আর সত্যিই কিছু জানি না।
অগ্নিভাস পকেট থেকে মোবাইল বার করে টর্চ জ্বালাল। এবার সে এই চতুর্থ ব্যক্তিটিকে ভালভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখল, এই প্রথমবার। ওকে লোক না বলে ছেলেই বলা যায়। কেননা ওর বয়স খুব একটা বেশি নয়, এই বড়জোর বাইশ-তেইশ হবে। অগ্নিভাস ছেলেটিকে মোবাইলের টর্চের আলোয় অনেকক্ষণ ধরে দেখতে থাকল। টোটনের মধ্যে একটা মেয়েলি আভা আছে। দাড়ি গোঁফ নেই বললেই চলে। অগ্নির এরকম ছেলেদের খারাপ লাগে না। মানে, কাজ চালিয়ে নেওয়া যায় কষ্ট করে। এরকম একজন ক্লায়েন্টও তার ছিল। তবে অগ্নি নিজেকে সমকামী বা উভকামী ভাবতে মোটেও রাজি নয়। তার মতে, উজ্জ্বল, নরম ও রোমহীন ত্বক, শরীরে একটা আলাদা লাবণ্য এবং সামান্য হলেও মেয়েলি ভাব থাকায় এদেরকে মেয়ে ভাবাই যায়। তাছাড়া, পুরুষাঙ্গ থাকলেই কেউ পুরুষ হয় না!
অগ্নি টোটনের গোপনাঙ্গে রিভলভার ঠেকিয়ে বলল, তুই তো কিছুই জানিস না। তার মানে, তোর মন ভর্তি অন্ধকার। প্যান্ট খোল। খোল প্যান্ট।
কথা না বাড়িয়ে টোটন পোশাক খুলতে শুরু করল। সে নিজের জামাটাও খুলে সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে দাঁড়াল অগ্নির সামনে।
অগ্নি ভালো করে টর্চের আলো ফেলে টোটনের গোপনাঙ্গটা দেখে নিল হাত দিয়ে নেড়ে-ঘেঁটে। তারপর ধমক দিয়ে বলল, উপুড় হয়ে শুয়ে পড় জলদি।
টোটন মাটিতে শুয়ে পড়ল। আজকাল অগ্নির প্রায়ই মাথা ধরছে। সমস্যাটা শুরু হয়েছে সপ্তাহ দুই হল। তাই সে হিমকেশর তেলের পাউচ সঙ্গে রাখে। অগ্নি ইমারজেন্সি ল্যাম্পটা তুলে নিয়ে সেটাকে মাটিতে একটা আছাড় মারল। ল্যাম্পটা ভেঙে গেল মাটিতে পড়ে। খুব সাবধানে তার ভিতর থেকে একটা টিউব লাইট সে খুলে নিল। তারপর পকেট থেকে হিমকেশর তেলের একটা পাউচ বের করে সেটা ছিঁড়ে নিয়ে সে টিউব লাইটে কিছুটা তেল মাখিয়ে নিল। তারপর এক পৈশাচিক হাসি হেসে অগ্নি টিউব লাইট দিয়ে আঘাত করল টোটনের বহির্গমন পথে। এবার যন্ত্রণায় টোটন কঁকিয়ে উঠল। তবে অগ্নি থামল না, তার একটু অনুশোচনাও হল না, এমনকী বিবেকেও বাঁধল না। সে ডান হাতে টিউব লাইটটা চেপে ধরে বাঁ হাত দিয়ে টোটনের নিতম্বের বাম অংশ কিছুটা টেনে ধরল। তারপর অগ্নি টিউব লাইটটা ঢোকাতে শুরু করল চাপ দিয়ে। আর এভাবেই সে টিউব লাইটের অগ্রভাগ প্রবেশ করাল টোটন মান্নার শরীরের ভিতর। টোটনের মলদ্বার থেকে রক্ত বেরোতে লাগল।
এবারে অগ্নির বেশ অনুশোচনা হল। তার মনে হল, এতটা বাড়াবাড়ি হয়তো না করলেই ভাল হত। কিন্তু কী করবে, তীব্র একটা ইচ্ছা এবং আক্রোশ থেকে সে এমন কাজ করে ফেলেছে এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অগ্নি উঠে দাঁড়াল তারপর ঝুঁকে পড়ে এক ঝটকায় টিউবটা টেনে বার করে আনল। টোটনের শরীরটা বিদ্যুতের শক খাওয়ার মতো ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল। অগ্নিভাস টিউবটা দূরে ছুড়ে ফেলে দিল। টোটন তখনও মাটিতে শুয়ে আছে। তার শরীরটা মাঝে মাঝে কেঁপে উঠছে যন্ত্রণায়। অগ্নি কিছুটা মাটি তুলে নিল হাতে। তারপর টোটনের পায়ুর ক্ষতস্থানে আস্তে আস্তে লাগাতে থাকল। কিছুক্ষণের মধ্যেই রক্ত বেরোনো বন্ধ হয়ে গেল।
টোটন মান্না আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়াল। সে অনুভব করল, ব্যথা তার অনেকটাই কমে গিয়েছে। সে ধীরেসুস্থে পোশাক পরে নিল। টোটন দু’-একবার আড়চোখে অগ্নিভাসকে দেখল। অগ্নিকে টোটনের বেশ ভালই লেগেছে। এমন নির্মম-পাশবিক অত্যাচারের পরেও টোটনের অগ্নিভাসের প্রতি রাগ, হিংসা বা প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা জন্মাল না। টোটন নিজেই নিজের এই ব্যবহারে অবাক হয়ে গেল।
মেঘ সরে গিয়ে এবার হালকা চাঁদের আলো টোটনের মুখে এসে পড়ল। অগ্নিভাস দেখতে থাকল টোটনকে। এখন টোটনকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। অগ্নি ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল টোটনের দিকে, তারপর হঠাৎই সে তাকে জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে নিল। টোটনের নরম গাল টিপে দিল। আদর করল তার মাথায়, পিঠে। তারপর আস্তে আস্তে অগ্নি টোটনের বুকে হাত বোলাতে শুরু করল। অগ্নি টোটনের জামার দুটো বোতাম খুলে ফেলল তারপর সে জামার ভিতর দিয়ে হাত বোলাতে থাকল তার নরম মসৃণ বুকে। টোটনের বুকে অল্প হলেও স্তনের আভা রয়েছে। অগ্নির হাত টোটনের স্তনে খেলা করতে থাকল। অগ্নির মনে হল, আবার সে টোটনকে উলঙ্গ করবে তবে এবার ভালবেসে। তারপর সে মিলিত হবে টোটনের সঙ্গে। অগ্নির আদরে টোটন মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল। অগ্নি প্রস্তাব রাখতে যাবে টোটনের কাছে, ঠিক তখনই তার মনে হল— না। তা তো সম্ভব নয়, কারণ অগ্নি একজন পুরুষ যৌনকর্মী, অর্থাৎ জিগোলো। টাকার বিনিময়েই সে যৌন সম্পর্ক করে। এভাবে মোহের বশবর্তী হয়ে সম্পর্ক করা মানে তার নিজের জীবিকাকে অপমান করা! অগ্নি নিজেকে সংযত করল তারপর টোটনকে ধরে একটু ঝাকিয়ে দিয়ে তার পিঠে আলতো করে একটা চাপড় মেরে বলল, চলো। এবার বেরোনো যাক।
(ক্রমশ)