T3 || ঘুড়ি || সংখ্যায় তীর্থঙ্কর ভট্টাচার্য

গল্পের ঘুড়িগুলো
এক
রঙ বেরঙের সেই ঘুড়িটা
আকাশ পানে পাড়ি দিত-
আমার মনটা কি ঘুড়ি হয়ে যেত?
রাস্তার ধারের ঘুড়িওয়ালাটা আর নেই
হাতছানি দিয়ে যে ডাকত বারবার।
মনটা বারবার সাড়া দিতে চায়
ঘুড়ি হয়ে চায় সেথা যেতে
রঙ বেরঙের দিনগুলো ফের ফিরে পেতে।
দুই
ছাদের খোলা হাওয়া নেই আর
নেই আর খোলা মাঠের ডাক
বি এইচ কে আর মুঠো ফোনের খেলা
ভুলতে বসেছি সোনালি বিকেল বেলা।
অনেক ঝড় আর উপেক্ষা অনাদর সয়ে
আজও কেটে পড়া ঘুড়িটা আটকা পড়ে আছে
যেমন আটকা পড়ে আছে খেয়ালি ডানাভাঙা মন।
আজও তাকে দেখলে আজকের দিনে
কত স্মৃতি আসে মনে ধেয়ে-
লাল নীল কাগজের রঙে নেয়ে।
আগমনীর সুর আর প্যাণ্ডেলের বাঁশ
বিশ্বকর্মা পুজোয় মাইকে গতবারের পুজোর গান।
পুরনো সে খেলার সাথী চেয়ে আছে পথ
মনের জানালা খুললেই রঙিন খুশির ঝলক।
তিন
আজও চিলেকোঠার সেই ঘরে
রয়েছে পড়ে সেই ঘুড়িখানি।
পুরনো জীর্ণ বিবর্ণ এক খণ্ড
আঁকড়ে ধরা এক স্মৃতির সাক্ষ্য মানি।
একটি মায়ের আঁচল জড়ানো তাতে,
একটি ছেলের হারিয়ে যাওয়ার দুখ
অনেক যত্নে রেখে দেওয়া ঘুড়ি
আজও কি ভাসে পুরনো এক মুখ?
দেখেছে কি কেউ মায়ের সেই বুক?
অনেক বকুনি অনেক মারের পরে
ছাদে যখন ওড়াতে গেল ঘুড়ি,
ছাদের আলসে হড়কে গিয়ে পা
পড়ল নিচে, আর সে গেল নিজেই উড়ি।
মায়ের সে বুক আজও আঁচল ঢাকা
বহু বছর হয়েছে গিয়ে পার
কেউ রাখেনি মনে সে পুরনো কথা –
দেখতে পেলাম চিলেকোঠায় গিয়ে
তাদের বাড়ি গেলাম ফের এবার।