না না রাগ করলে চলবে না, সত্যি কথাটা শুনতে হবে,
শুনতে হবেই!
কি ভাবছেন পালাবেন,যে ভাবে পালিয়েছিলেন পাড়ার রতন গুন্ডা খগেনের মেয়ের ওড়না ধরে টানায়?
আপনার মেয়েতো তো সেফ্
বারে! আপনার মেয়ের তো ব্যাঙ্ক-চাকুরে বাবা আছে
ও তো আর খগেনের মেয়ের মত রিক্সায়ালার মেয়ে নয়
ওদের আবার মান সম্মান!
কি ভাবছেন চোখ বুজে থাকবেন
যেভাবে চোখ বুঝে ছিলেন অফিস ফিরতি ট্রেনে
যখন একটা নোংরা হাত কলেজ ফেরৎ মেয়েটির বুক খাঁমচে ধরেছিল
আপনার মেয়ের বুক তো কেউ ওভাবে খাঁমচে ধরবে না
ও যে স্কুল বাসে যায়
স্কুলে আপনার সহকর্মী যখন ছোট্ট বাচ্চা মেয়েটিকে শাস্তি দেবার নামে
ছড়ি দিয়ে ওর গোপনাঙ্গে খোঁচা দেয় আপনি শিউরে ওঠেন
আপনার সেভেনে পড়া সদ্য ঋতুমতী মেয়ের কথা মনে পড়ে
যাক ও তো এই স্কুলে পড়ে না
আপনি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন
পাশের বাড়ির পড়শী মদ খেয়ে বৌ পেটায়
চিৎকারে আপনি ঘুমোতে পারেন না
ওদের ছোট্ট বাচ্চা ছেলেটা চিৎকার করে কাঁদে, “মা, মা, আমার মাকে বাঁচাও! ”
আপনি জানালা বন্ধ করেন
স্ত্রী কে বলেন আপনার মেয়েকে নিয়ে দোতলার কোণার ঘরটায় শুতে
এসব শব্দ ওর মনের জন্য ভালো নয়
আর সেই বাচ্চা ছেলেটার মন? যে রোজ তার মাকে মার খেতে দেখছে?
পণের জন্য আপনার মেজো শালীর মেয়ের বিয়েটা ভেঙে গেল
আপনার কিই বা করার আছে?
আপনি তো চেয়েইছিলেন, ছেলের তিনভরির গলার হার টা দিতে
তবু দেনা পাওয়ায় না পোষালে আপনার কিইবা করার থাকতে পারে
গত রাতে পাশের পাড়ার মেয়েটাকে নাকি কারা ধর্ষণ করে ফেলে রেখে গেছে বাইপাসের ঝোপের ধারে
আপনার বুক কেঁপে ওঠে
আপনি স্ত্রীর সঙ্গে শলাপরামর্শ করেন
আপনাদের মেয়েটাকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করলেই বিয়ে দিয়ে দেবেন
যা দিনকাল পড়েছে!
“পড়ার ইচ্ছে, তা শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে পড়ুক না যত খুশি”
আপনি এর পরও আয়নার সামনে দাঁড়ান!
নিজেকে মানুষ ভাবেন!
আপনাকে কেউ সত্যিটা বলেনি?
আমি বলছি
“আপনি মেরুদণ্ডহীন,
আমি আপনি, আমরা সবাই মেরুদণ্ডহীন
যারা এই সব দেখেও চুপ করে থাকি
ভাবি ,আমি তো বেঁচে গেলাম”!
সত্যিটা শুনে রাখুন আমরা যারা এসব রোজ রোজ মেনে নিচ্ছি
তারা শুধুই মেরুদণ্ডহীন
মেরুদণ্ডহীন বই আর কিচ্ছু নই
কিচ্ছু না!