T3 নববর্ষ সংখ্যায় সুব্রত সরকার

 রেনকোজি

এসেছি চেরি ব্লসম এর জাপানকে দেখতে। জাপান জুড়ে চলছে ওদের বিখ্যাত উৎসব – সাকুরা ফেস্টিভ্যাল। এই উৎসবকে দেখব আর   তার সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়ে নেব জাপানের বড় বড় শহর, মন্দির, পর্বত, সমুদ্র। তাই দশ দিনের ঠাসা সফরসূচীতে সবই ছিল, কিন্তু ছিল না রেনকোজি ভ্রমণের কথা।

রেনকোজি টেম্পল দেখার ইচ্ছেটা হঠাৎ করেই আমাদের হলো। জাপানে এসেছি রেনকোজি টেম্পলটা একটু দেখে গেলে তো হয়!সফরসূচীতে অদলবদল করে রেনকোজিকে ঢোকানো হলো।

টোকিও থেকে সুগিনামি শহরে রেনকোজি টেম্পল দেখতে চলেছি। বাস এসে থামল রেনকোজি টেম্পলের অদূরে। পায়ে হেঁটে এক শান্ত পাড়ার মধ্যে দিয়ে কয়েক মিনিটেই পৌঁছে গেলাম রেনকোজি টেম্পলের কাছে। মন্দিরের গেটে দাঁড়িয়ে হঠাৎই কেমন একটা অন্য অনুভূতি হলো। সবাই চুপচাপ হয়ে গেলাম। খুব আস্তে আস্তে কথা বলছি। গম্ভীর একটা পরিবেশ নিজেরাই তৈরী করে ফেললাম।

রেনকোজি মন্দিরের চাতালে নেতাজীর আবক্ষ মূর্তি  রয়েছে। সেই মূর্তিকে প্রণাম করলাম। মূর্তির পেছনে কালো পাথরের লেখাগুলো কেউ কেউ পড়লেন। মন্দিরের গেট বন্ধ। পূজারী আছেন কিনা জানি না। কেউ জানতেও চাইলেন না।

কারোরই তখন আর কোনও উৎসাহ নেই মন্দিরের মধ্যে কোথায় রাখা আছে নেতাজীর অস্থিভস্ম তা দেখার। অথচ এই রেনকোজি টেম্পল দেখার জন্য কত উৎসাহ, সফরসূচীতে কত কাটছাঁট করে তবেই এসেছি!..

গাড়ি টোকিও মুখী হয়ে চলতে শুরু করেছে। বিকেলটা গড়িয়ে সন্ধের দিকে ঢলে পড়েছে। পথের ধারে অনেক চেরি ফুলের গাছ চোখে পড়ল। ফুলে ফুলে ভরে আছে গাছগুলো। চেরি ব্লসম এর জাপানে রেনকোজি তখন  হারিয়ে গেছে!..

২৩ জানুয়ারি দীর্ঘজীবি হোক!..

বাসের মধ্যে কে যেন হঠাৎ বলে উঠল।

কে বলল কথাটা, তা নিয়ে কারোর কোনও আগ্রহ দেখলাম না। কথাটা সবাই একসঙ্গেই বললাম নাকি!..

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।