কবিতায় বলরুমে (গুচ্ছ কবিতা) শ্রী সদ্যোজাত

সূর্যমুখী

তুমি তো পরিযায়ী মুখের আকাশগঙ্গা নও
তুমি তো ছ’টা ঋতুর অধিক মুখের ঋতুপর্ণা,
তোমার অবয়বে সেতুপথে কেবল স্বস্তিকের আনাগোনা,
বাঁধনহারা রজনীগন্ধার মালা তোমায় মানায় ভারি,

নির্জলা উপবাসের ঘরে তুমি চলন্তিকা তুমি’ই স্বস্তিকা,
বন্ধ বহু চোখে আলোয় আলোয় আলোকছটা,
তোমার ঈশান বুক থেকে অন্তহীন গন্ধহীন সৃজনী পথের সূচনা,
শুধু তুমি’ই জানো না,তুমি’ই মানো না,

যাবার আগে শুধু ঠিকানা’টাই যা বলে গেলে না,
যদি পারো ওখানে একটা ফুটফুটে রজনীগন্ধার চারা লাগিও,
তোমার হাতের ছোঁয়ায় সে যেন রাতেও ঝিমিয়ে না পড়ে,

তুমি চিন্তা করো না,ব্যস্ত শরীর হোয়ো..না,
রাখালিয়া সুরে স্বরলিপিতে রঙের মেলা বসে না যে,
সে তোমায় ছেড়ে কোত্থাও যাবে না,

প্রতি বিকেল শেষের দু’পশলা ভাঙা গোধূলি দিয়ে তোমার দরদি প্রাণের অজস্র জলছবি আঁকে সে

কিছু রঙহীন নক্ষত্র জোট বেঁধেছে তোমার বাড়ির ওপরে,সংকল্পের আকাশটা’তে,জন্মের মতন মরণের’ও একটি জন্মসৌধ থাকে,
শিউলি ছোঁয়া নরম অগ্নিপথের আয়োজন সেখানেও আছে,
ঘরে ফেরার ডাকেও সে যে ঘরে ফেরেনি,
পোড়া চৌকাঠে পড়ে আছে বাসি মুখের একটি নয়নতারা,
বিষাদ’টুকু ভুলে গেলে তবে জেনো সবটা’ই মৌনমাখা গঙ্গা,
সবটাই ভাঙা একতারা,
শুধু তুমি’ই জানো না
তুমি’ই মানো না.. !!!

কেমন আছো শারণ্যা ?

তোমাকে দেওয়া শেষ চুমু’তে কোনও ক্ষত ছিল না, অসংখ্য আঁচড় ছিল দুর্নিবার মৃত্যু ছিল,
একটা সময় ছিল আমার মিস কালো ঠোঁট তোমার বন্য তলপেটের অনাবিষ্কৃত তিল তিল নিষিক্ত ঢেউ ছিল ,,,,,,,
তোমাকে ভালবাসার আজন্মকাল অধিকার শুধুই আমার.
এক অলিখিত যুগ যুগান্তর শান্ত অধীর দীর্ঘ কৃষ্ণচূড়াটার মতন,
তোমার ভাদ্র বুকটা কবে এসে ঢাকবে বলতো আমার ফাল্গুনী ক্লেশ,
তোমার সরীসৃপ নিবিরতা কবে এসে ধরবে আমার ঘর্মাক্ত অবকাশ ,
তোমায় দেখব অগণিত মূলে মূলে,
অজস্র কোষে কোষে,

কোনো দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ কিংবা পঞ্চম শরীরের মতোন নয় ,
তুমি আমায় আদর করবে সকল পিছুটান এর অংক সারা আঠালো কোনো উলঙ্গতার অনিমেষ কার্নিস চুঁয়ে,
ঠিক যেমন
বিষাক্ত ভালোবাসার নিষিদ্ধ ছোবল,
বিবিধ আগল,
বলো হরি -‐——হরি বোল
কি যে করি ওই রূপে আঁধারে পাগল,,,,,

যোজন যোজন চৌকাঠ না ভাঙলে সদর দরজার ইতিহাসটা ধামাচাপা পড়ে যায় ,
বিধস্ত প্রেমের নামহীন গন্ধটা আকাশ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে না ,

এই একাকী পথ চলতে চলতে পথের দুরত্বটা
ভোর-রাত হয়ে তোমার আটপৌরে বাউলে জড়িয়ে ধরে,,,,,
শারণ্যা তুমি কি সত্যিই কোনো নিলাম হয়ে যাওয়া নীলাভ পুরুষের নিশিতে ডুবে মরতে পারো ??

একটা মিথুন প্রতীক্ষা
শারণ্যা আসবে
শারণ্যা চলে যাবে……….

 

 

সুখের যন্ত্রণা
               কিংবা
               বিষের বিহ্বলতা

আমি আমারও অধিক আমাকে হারিয়েছি আকাশ,
তুমি এলে যখন আমার অরণ্য প্রভা আলোকিত তথাগত

তোমাকে যখন জড়িয়ে ধরে প্রচন্ড কাঁদি,
বুকে মুখে মুখটা গুঁজে।
তুমি বুঝতে পারো না,
হয়তো ভাবছো ওগুলো তোমার লোমকূপের জল,

যেদিন তুমি থাকবে না চলে যাবে অনেক দূরে আমার দু’চোখের বাইরে,
প্রতি পদে পদে অজস্র হোঁচট খাবো
নিঃসঙ্গ গোধূলির মতন হাসবো
প্রচন্ড উলঙ্গ চিৎকার করব তোমার স্নানের ঘরে একাকী চুপিচুপি,,,,

স্বীকার করুক বা নাই করুক,
মানুষ কিন্তু দিনের শেষে হারাতেই বেশি ভালোবাসে,
আসলে কি জানো তো,
রাজবন্দী প্রেমিকের বুকে রাজবন্দিনী প্রেম”টা আভিজাত্যে যেমন গাঢ় ততটাই ফ্যাকাসে ততটাই বিবর্ণ চন্দ্রিমা ,,

এই বাসি শরীরে তন্ন তন্ন করে কত কি খোঁজা আর খ্যালা তোমার,,,
সত্যিই কি কিছুর সন্ধান পেয়েছিল
তোমার পিছুটান হীন প্রেমবর্ষণ তৎপরতা’টা ???

মেয়ে জন্ম’টা যেন কেমন কেমন,
আবাহন বিসর্জন দুটোই হয় একই ঘাটে একই লগ্নে,

তুমি চলে যাবে সোনালি রোদ্দুর হয়ে অচিন বসন্তে,
থেকে যাবে তোমার রক্তশূন্য বিবর্ধিত ছায়া,
আর
আমার বিবস্ত্র বেলোয়ারি পল্লীসুখের ভালোবাসা,

মেয়েদের দ্বিতীয় ঘর বাঁধার শ্রাবণী গল্পটা
ছোট্ট বেলার চাঁদ মামার গল্পের মতন
পুরোপুরি সত্যিও নয় পুরোভাগে মিথ্যেও নয়…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।