|| কালির আঁচড় পাতা ভরে কালী মেয়ে এলো ঘরে || T3 বিশেষ সংখ্যায় শর্মিষ্ঠা সেন

আরশিতে দেখি

আরশিতে আমি নিজেকে সুন্দর দেখি।

আমায় ছায়া ছায়া ত্বক তোমাদের গম রাঙা মাছি পিছলানো চামড়ার চেয়ে কম ভালো কিছু নয়।‌

আমার মনখারাপের ধূসর দাগ হাট করে খুলে দেয় সাদামাটা দাম্পত্যের দিনলিপি।

কনসিলারে ঢাকা যা কিছু, তা গোপন ক্ষতের মতো তোমাদের বুকে চাপা পড়ে থাকে হলদে ঘাসের মতো।

আরশিতে আমি নিজেকেই দেখি।

শ্যামলা রঙের মেয়েটাকে তোমরা বলেছিলে, ‘আহা! নতুন বউয়ের মুখখানি ভারি মিষ্টি! বিয়ের জলে রং এবার খোলতাই হবে!’

মেয়েটা ভক্তিভরে খোঁপায় আঁচল দিয়ে সেবার ছবিতে দুটো জবা বেশী দিয়েছিল।

ননদ ভালোবেসে তাকে হলুদ-সর-ময়দা বেটে দিত রোজ। বলতো, ‘দেখিস, এতটা চাপা থাকবেনা।’

এসব ভুলে আমি আরশিতে মুখ দেখি।

তেল, সাবানের বিজ্ঞাপনে ঘুরে যাওয়া মেয়েদের হাসি হাসি মুখ মাথায় নিয়ে কালো বউটা কড়ায় মাছ ছাড়ে। কখনও ছিটে আসে গরম তেল।

কালো মুখে, হাতে আরো কালো দাগ পড়ে। সেসব গায়ে মেখেই রাত দুপুরে অভ্যাসের যৌনতা, পুজোয় হালকা বুটিদার শাড়ি, ধনতেরাস ধমাকা। জীবন কাটে যাহোক করে।

তোমাদের দেখি আর পাষাণপ্রতিমা হয়ে পুজো নিতে ভুলে যাই বারবার!

আরশিতে আমি নিজেকে বড় সুন্দর দেখি!

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।