ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন – ১১৭

ফেরা

কি ব্যাপার রে? অন্যবার তুই হোটেলের ঘর আমাদেরকে দেখিয়ে নিস, আজ কিছু না বলে একেবারে বুক করে এলি?
গাড়ি থেকে ব্যাগ বার করতে করতে অনির জিজ্ঞাস্য। পাশে শতাব্দীও চোখ বড়ো করে তাকাচ্ছে।
এ এমন ঘর, যদি তোদের এক পলকেই পছন্দ না হয় তো আমার নাম বদলে দিস।
বাবা! কি কনফিডেন্স। চল তাহলে যাই।
ঘরে ঢুকে প্রথম মন্তব্য, নাহ তোর নাম চেঞ্জ করার দরকার নেই।
কি খুশি দুজনেই। চটপট ব্যাগ খুলে জিনিসপত্র বার করতে লেগে গেল। কর্মা এসে বিদায় জানিয়ে বলে গেল কাল সকাল আটটায় আসবে। কাল লেহ সিটি ট্যুর।
আরো আধা ঘন্টা পর তিন মূর্তি বেরোলাম। সামনেই একটা ক্যাফে আছে, নাম আঙ্কল ববস, ওখানে গিয়ে খাবো কিছু।
ছোট্ট সুন্দর ক্যাফে। আরাম করে বসে আমাদের চিকেন আর অনির ভেজ বার্গার অর্ডার করা হলো। সাথে স্পেশাল লেমন হানি চা।
চারদিকে তাকিয়ে দেখি। প্রচুর ট্যুরিস্ট চারপাশে। তবে বিদেশীরা সংখ্যায় অনেক বেশি। ঐ ঠান্ডার মধ্যে তারা দিব্যি টি শার্ট পড়ে ঘুরে বেরাচ্ছে।
আরো দুটো জিনিস খেয়াল করলাম। ধারে পাশে প্রচুর ক্যাফে আর বাইক রেন্ট শপ। আমাদের মতো গাড়িওয়ালা ট্যুরিস্ট হাতে গোনা। সব যে যার মতো বাইকে চলেছে। দেখে যে আমার ইচ্ছা হয়নি, এ কথা বললে সত্যের অপলাপ হবে।
প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষা করার পর খাবার এলো। স্বাদ চমৎকার। আর এটাও দেখলাম, ওখানে যারা থাকছে বা যারা আসছে, তারা সময়ের ব্যাপারে অত্যন্ত ঢিলেঢালা। যেন এক আধঘুম পুরী।
পরবর্তী যে কটা দিন আমরা লাদাখে ছিলাম, আমরাও সেই পুরীর সক্রিয় বাসিন্দা হয়ে পড়েছিলাম। প্রথম প্রথম আমার আর অনির অসুবিধা হলেও পরে মানিয়ে নিয়েছিলাম। আর শতাব্দীর তো কথাই নেই। সে চিরকাল ঐ নীতিতেই বিশ্বাসী ছিলো, সে যেন নিজের দেশে এসেছে, এমন ছিলো হাবভাব।।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।