ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন – ৬৬

ফেরা

বলো যমুনা মাইয়া কি…
জয়…
অন্যান্য তীর্থের মতোই দেবীর জয়গান গেয়ে যাত্রা শুরু। জানকী চটির কোলাহল ছাড়িয়ে এগিয়ে চলা পাকদন্ডী বেয়ে। রাস্তাটি কেদারনাথ পথের থেকে সরু। তাই ঘোড়ার পিঠে ধীর গতিতে চলেছি। আশে পাশে অনেক যাত্রী, কেউ হেঁটে কেউ বা দান্ডি, কান্ডি বা ঘোড়ার পিঠে। মাঝে মাঝে জয়ধ্বনি, তারপর চরৈবেতি। কিছু জায়গায় জঙ্গল হয়ে আছে, গাছের মাঝ বেয়ে ঠান্ডা হাওয়ায় শরীর সিরসির করছে। আবার ফাঁকা জায়গায় এলে গরম। প্রায় দুই ঘন্টা চলার পর মায়ের মন্দির। ছোটো, খুব বড়ো নয় বাকিদের মতো। পাশেই উষ্ণ প্রস্রবণ। নামি, হাত মুখ ধুয়ে মেতে উঠি মাতৃ আরাধনায়। প্রার্থনা করি সবার ভালোর জন্য। খানিকক্ষণ চুপ করে বসে মনের মাঝে এঁকে নি তীর্থ স্থানের ছবি।

ঘন্টাখানেক এভাবে বসার পর বাকিরা এসে তাড়া দেন। যে ঘোড়া করে এসেছিলাম, সেই ফিরিয়ে নিয়ে চলে। ঘোড়া ওয়ালার সাথে গল্প চলে, জানায় ক্ষেতি বাড়ি আছে, তাছাড়া এই পথে ঘোড়া নিয়ে চলে। পয়সা ছাড়াও এ তাদের কাছে এ বড়ো পুণ্যর কাজ। উৎরাইয়ে অনেক কম সময় লাগে। একসময় জানকী চটি আসে। ঘড়ি বলে চারটে। ঘোড়াওয়ালাকে বিদায় জানিয়ে দলের সাথে খাবার খাই। বাস পৌঁছে দিয়ে যায় বারকোট। আমাদের হিসেবে সন্ধ্যা হলেও ওখানে তখন ভরা আলো। তবে সেদিন তাড়াতাড়ি শুতে যাই। বহু বছর পর ঘোড়া চড়ার ফল, শরীর টাটিয়ে ওঠে। গরম জলে এক পেগ ব্র্যান্ডি মেশাই। আহঃ কি আরাম। শরীর শিথিল হয়। পরম আরামে চোখ বুজি। কাল আবার ভোরে উত্তরকাশী যাত্রা।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।