ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন – ৬৪

ফেরা
হোটেলে ঢুকে, জিনিসপত্র গুছিয়ে সবে বসেছি, ছুটতে ছুটতে ঘরে ঢুকলো দলের অন্যতম কর্ণধার ডাবলা দা। রীতিমতো হাঁপাচ্ছে। হঠাৎ কি হলো। কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই বললো, শিগগিরই ছাদে যা। ছাদে? কেন? আরে মেঘ কেটে গেছে। পরিস্কার বান্দরপুঞ্ছ দেখা যাচ্ছে। বাকি শিখর গুলোর দারুণ ভিউ। ক্যামেরা নিয়ে জলদি যা।
ওয়াও। এতো দারুণ সারপ্রাইজ। রুকস্যাক থেকে ট্রাইপড বের করে ক্যামেরা গলায় ঝুলিয়ে দৌড়। ছাদে উঠে ডাইনে তাকাতেই মন চমৎকৃত। তুষারশুভ্র শিখররাজি।তার পর খেলা করছে অস্তগামী রবির আলো। গলানো সোনা চুঁইয়ে পড়ছে পৃথিবীর বুকে। বেশ খানিকক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে ছবি তুললাম। তবে মনে মনে এটাও জানতাম মনের ক্যামেরার ছবিগুলোই থেকে যাবে। আজো মনের মাঝে তাকে দেখতে পাই, চাইলেই।
সন্ধ্যা নামে ধীর গতিতে। দূরের পাহাড়ের গায়ে ছোটো ছোটো ঘর গুলোতে আলো জ্বলে। মনে হয় যেন জোনাকি জেগে উঠছে এক এক করে। ছাদেই বসে থাকি, একা, সারা শরীরে ছড়িয়ে যায় নিস্তব্ধতার সুবাস।
বাবু।। সহসা চটকা ভাঙে। অধিকারী কাকুর বিধবা শ্যালিকা, আমি দিদি বলে ডাকি। দিদি হঠাৎ এখানে? হ্যাঁ বলো দিদি। কাল যমুনোত্রী কি করে যাবি? হেঁটে না ঘোড়া নিয়ে? আপ ডাউন ১৬ কিমি না? পুরনো কথা মনে পড়ে। দিদি কে বলি, ভেবো না। আমরা হেঁটেই মেরে দেবো। দিদি খুশি হয়ে নীচে চলে যায়।
ভুল বলেছিলাম। আগের ট্রিপের পর তখন সাত বছর কেটে গেছে। নানা রকম নেশা করেছে এ শরীর। দম যে কমেছে, জানতাম না। বুঝিনি একদমই। বুঝলাম যখন পরদিন হনুমান চটি থেকে হাঁটার সময় এলো।