গল্পেসল্পে সমিত রায় চৌধুরী

চির – যৌবন
বসের ঘরের কাঁচের দরজা ঠেলে বসের এটেনডেন্ট বাদল বেজার মুখে বেরিয়ে আসলো। শুধু মেজাজ দেখিয়ে গজ গজ করছে সে আর বলছে, “যত সব যন্ত্রণা। এই চাকুরী আর ভালো লাগে না। ছেড়ে চলে যাবো গ্রামের বাড়িতে।”
উল্টোদিকের কিউবিকেলস-এ বসা সুজয় ও বর্ণালীও আজ বস -এর থেকে বকা খেয়ে চলছে। সেটা অবশ্য গত বেশ কয়েকদিন ধরেই হচ্ছে। বস’কে যে কাগজই দেওয়া হয় শুধু বলেন, “তোমাদের প্রিন্টার ভালো না।” কাগজটা হাতে নিয়েই সামনে পেছনে করতে থাকেন, আর কলপ করা গোঁফে হাত বোলাতে বোলাতে বলেন, ” কিছু বোঝা যায় না।” তারপর শুরু করেন সেই এক বাণী, “কাজের প্রতি তোমাদের ভালোবাসা নেই। প্রেজেনটেশন ভালো না। ভেরি পুওর। হোপ লেস।”
দুপুরে অফিস ক্যান্টিন-এ সুজয় বাদলকে ডেকে তার উষ্মার কারণ জিজ্ঞেস করায়, সে বলল, “বুড়োটার চোখটা গেছে। চশমা আছে। চশমা পরবে না। বেটা’কে ফাইলের লেখা পড়ে পড়ে শোনাতে হয় আমাকে। আমি ক্লাস এইট পাস। আমি কি আর ইংরেজি তেমন পড়তে পারি? ছেড়ে দেব ব্যাটার চাকুরী। চশমা লুকিয়ে কি আর যৌবন ধরে রাখা যায়? “