T3 || আমার উমা || বিশেষ সংখ্যায় সুদীপ পাঠক

কুমারীর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা

কুমারীপূজার পাট সাঙ্গ হলে উপস্থিত সকলে ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়ল । জ্যান্ত দুর্গাকে প্রণাম করার লোভ সম্বরণ করা বড় কঠিন । পূণ্য সঞ্চয়ের এহেন নগদানগদি সুযোগ হাতছাড়া করে কে ? শিশুটিরও কিছু অর্থপ্রাপ্তি ঘটছিল বটে , প্রণামী বাবদ ! দূরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম , চারিধার ফাঁকা হয়ে এলে পায়ে পায়ে এগিয়ে এসে হাঁটু গেড়ে বসলাম মহারানীর সিংহাসনের সন্মুখে । খুব সন্তর্পনে আঁচলা ভরে জল তোলার মতন করে দু’হাতের তালুর মধ্যে ওর কচি পায়ের পাতা দুটো তুলে নিলাম । ছোট্ট নরম আলতা পরা রাঙা পা দু’খানি। চোখ তুলে তাকালাম পাঁচ বছরের শ্রান্ত বালিকার মুখ পানে । তালিম মতন সে এবার হাত তুলেছে , বরাভয় দানের জন্য । হেসে ফেললাম আমি আর সেই সঙ্গে দু’চোখ বেয়ে নামল জলের ধারা । শিশুটি যে সাংঘাতিক রকম অবাক হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই কোনো । ভাবছে এ আবার কেমন তর পাগলামি ! একই সঙ্গে হাসে আবার কাঁদে ! ওরে মা ; তোরে বোঝাই কেমন করে ! এই দ্বিচারিতা আর ভন্ডামি কবে বন্ধ হবে বলতে পারিস ? আজ যারা সাজাচ্ছে নৈবেদ্য , দিচ্ছে পুজো কাল তারাই হানবে লোলুপ দৃষ্টি তোর দিকে । শিশিরে ভেজা পারিজাতের মতন অপাপবিদ্ধ তোর শরীরটা হয়ত শিকার হবে কোনো ক্লেদাক্ত হাতের । এখানেই এখনই প্রকাশ্যে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে
— আমায় ক্ষমা কর । আমি ক্ষমা চাইছি , এ যাবৎ যত নরপশু জগতের যত নারীধর্ষণ করেছে সেই সমস্ত মায়েদের কাছে আমি নতজানু হয়ে ক্ষমা চাইছি । জানি জানি ক্ষমার অযোগ্য তবু …।
নিজের পুরুষাঙ্গ উৎপাটন করে ফেললেও বোধ করি এ গ্লানি প্রশমিত হবার নয় । তাই হে কুমারী তুমি অন্তত একবারের জন্য আমায় ক্ষমা করে দাও।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।