সাদা রং সেই ছোট্ট থেকে প্রিয় পূবালীর। কিন্তু আজকাল নিজের অঙ্গে এই সাদা রঙের শাড়ি দেখলেই অসহ্য লাগে। কেন চলে গেল জিষ্ণু! কেন সবকিছু বেরঙিন করে দিল এক নিমিষে? কতবার আস্তে বাইক চালানোর কথা বলেছে পূবালী, সব সময় হেসে উড়িয়ে দিয়েছে… হল তো,ওতেই তো শেষ হয়ে গেল।
শেষ বিকেলে কিছু পাখি ঘরে ফিরছে। পূবালী ছাদে বসে ওদের দেখছে আর হিংসা করছে।
জিষ্ণুর চলে যাওয়ার পরও ঐ বাড়িতেই থাকতে চেয়েছিল পূবালী। ঐ বাড়ি, ঐ ঘরের আনাচে কানাচে জিষ্ণুর স্মৃতি ।কিন্তু ওবাড়ির মানুষজন ওকে বাপের বাড়ি ফিরে আসতে বাধ্য করেছে।
— কি রে, সন্ধে হত চলল, এখনও এভাবে এলোচুলে এখানে বসে! অমঙ্গল হয় মা এমন করলে, মৃদু ধমক দেয় মা।
— আর আমার কি অমঙ্গল হবে মা… ডুকরে কেঁদে ওঠে পূবালী।
— নীচে যা, তোর বাবা রিপোর্ট নিয়ে এসেছেন। তুই মা হতে চলেছিস পূবা…
পূবালী বাকরুদ্ধ হয়ে যায়।
জিষ্ণুর অংশ তার শরীরে বেড়ে উঠছে একটু একটু করে!
অন্ধকার ফুঁড়ে নতুন আলো খুঁজে পায় পূবালী। একটু পরে নীচে নামতেই,প্রতি বছরের মতই খুড়তুতো ভাইবোনেরা ধরে, দিভাই রবীন্দ্রজয়ন্তীর রিহার্সাল করব না আমরা?
পূবালী অনেকদিন পর হাসে।
ধুলো ঝেড়ে তানপুরাটা বের করে।কিছু না ভেবেই গান ধরে, “ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালো…” ।