কবিতায় শম্পা মুখার্জী কোলে

সেই মেয়েটা
সেই মেয়েটা জন্মের আগে খুন হয় মায়ের পেটে।
সেই মেয়েটা কাগজ কুড়ায় প্রতিদিন ফুটপাথে।
সেই মেয়েটা পথের ধারে ছেঁড়া আঁচলে মুখ ঢাকে,
সেই মেয়েটা পণ না মেটায় আগুনে ঝলসে ওঠে।
সেই মেয়েটা অপমানের ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখে,
সেই মেয়েটা বিসর্জন হয় বোধনের আগে।
সেই মেয়েটা মা হতে না পারার অপবাদ বয়ে চলে,
সেই মেয়েটা ভালো আছি বোঝায় কৃত্রিম হাসির ছলে।
সেই মেয়েটা বিধবা মায়ের একমাত্র রোজগেরে,
সেই মেয়েটা রাতের ধকলে ধুঁকতে ধুঁকতে বাড়ি ফেরে।
সেই মেয়েটা মাতাল স্বামীর মুখ বুজে সংসার,
সেই মেয়েটা দেখেনি আলো জীবন অন্ধকার।
সেই মেয়েটা রাতের বেলা একলা ফিরতে ভয়,
সেই মেয়েটা সংসারে আজ কিছুই নেই সঞ্চয়।
সেই মেয়েটা অ্যাসিড হানায় দগ্ধ তার মুখ।
সেই মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে নির্বাক নিশ্চুপ।
সেই মেয়েটা পাঁচবাড়ি ঠিকে কাজ একাই সামলায়,
সেই মেয়েটা ধর্ষিত হয় যেখানে সেখানে অবলীলায়।
সেই মেয়েটা টাকার বিনিময়ে প্রতিদিন হাত বদল,
সেই মেয়েটা মিথ্যা ভালোবাসা বুঝলো না এতটাই সরল।
সেই মেয়েটা চোখের জল লুকায় ঘরের কোণে,
সেই মেয়েটা সুদিনের আশায় এখনো প্রহর গোনে।