সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব – ৮৪)

রেকারিং ডেসিমাল

বাড়িতে কালিপুজো হয়ে গেল।
দুই ছানা মায়ের ইস্কুলেই আবার ভর্তি হয়েছে।
এক জন নার্সারিতে একজন ক্লাস টু।
হাফইয়ারলি পরীক্ষা চলবে বলে নোটবুকে আন্টিরা লিখে দিয়েছেন।
মা দুটো জিরবিলকে এক সাথে পড়তে বসান। সারা বছর চাপ নেই, তবু পরীক্ষার আগে একটু হই হই বেশি চলে।
পরীক্ষা শেষ হলেই পুজোর ছুটি শুরু।
ফ্ল্যাটে ঠাকুমা ধৈর্য ধরে বসে থাকেন এরা যতক্ষণ পড়াশুনো করে।
বৌমার সাথে গল্প করাটা মুলতুবি থাকে।
পড়া শেষ করে এরা ছুটি পেলে ঠাকুমা গল্পের ঝাঁপি খোলেন।

ওরে, আমাদের বড় ঘরটাকে বলা হত, প্রবেশ নিষেধ ঘর।
ছিটকিনি দিয়ে তোদের বাবা আর পিসিকে পড়াতে বসতাম কিনা। বাপ রে, এত লোকের হইহুল্লোড়ের মাঝে পড়ানো কি ঝকমারি সে যে মা চেষ্টা না করেছে সে বুঝতে পারবে না। উফ। তার মধ্যে এক ঘা মারা যাবে না কাউকে অমনি কিনা দিদা এসে ষাট ষাট করে নিয়ে চলে যাবেন।
এদের পড়াতে যে আমার কি ছিদ্দত।
এদিকে দরজা বন্ধ করে পড়াচ্ছি, ওদিকে লম্বা জানালার পর্দা তুলে ছোট ছোট মুণ্ডু জিভ ভেঙাচ্ছে!!
বাচ্চারা পড়ে কখনও?
এতক্ষণ নিয়ে বসবার চেষ্টা করতাম বলে কি রেগে যেতেন শ্বাশুড়ি।
বলতেন, খুকু এতখানি সময় আটকাইয়া রাখসো, তোমার কি বাথরুম ও পায় না?

হাসে দুই খুদি এইসব গল্প শুনে।

তারপর বাবাকে পাকড়ান ঠাকুমা।
এই বাবু এইবারে ত বাচচারা একটু বড় হয়েছে। এইবারে আমায় বেনারস নিয়ে চল।
কবে থেকে বলে রেখেছি। চল বলছি, ভালো হবে না। নইলে কোন দিন যদি পট করে মরে যাই ভুত হয়ে এসে বলব, বিশ্বনাথ দেখালি না তাই শান্তি হচ্ছে না। চল চল, এইবারেই পুজোর ছুটিতে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।