কাব্যানুশীলনে স্নেহাশিস মুখোপাধ্যায়

প্রাচ্যঘোর
যায়নি যে পলির ইতিহাস
তাকে কজনই বা নদীর কাছে গিয়ে দ্যাখে?
আমিও খুব কম নদীর কাছে গিয়ে বসি।
একটা দুপুরে, কিম্বা সন্ধ্যায় তুমি নদীর ঘাটের কাছে যেতে পারো।
মাথাভাঙা পার দেখে মনে যেন কষ্ট পেয়ো না!
পার আবার দাঁড়াবে, আবার তৈরি হবে জলের কল্লোল।
তুমি জলের শব্দে অনেক কথা শুনতে পাবে – যদি চাও।
না চাইলে, খেয়া পারাপার দেখতে পারো।
তাও যদি না চাও, তবে চুপ করে বসে থাকতে পারো।
চুপ করে বসে থাকা যায়?
কিছু একটা করাই তো – উপায়।
এইবার তুমি এর মানে খুঁজতে বসবে।
এখানেই মুশকিলে পড়ে যাই ঠানদিদি।
মানে কি করে বলি বলো তো?
উদ্দেশ্যহীন কথাই তো কতোদিন ধরে লিখছি।
মাঝে মাঝে ফিরে আসি পৃথিবীতে।
তুমি আমাকে উন্মাদ বলবে, বলো, ভালো লাগবে।
আমাকে কেউ আদর করে পাগল বলে না।
আচ্ছা, পলির ইতিহাসে এতো কি আছে?
আছে মাটির পরিবর্তন।
এইবার আমি মিথ্যাচারি হয়ে উঠছি।
সংলাপের মতো তোমার হাত চেপে ধরছি,
রেগে উঠছি প্রলাপের মতো।
তোমাকে কাঁদতে বলবো নদীর মতো।
নদীকে কাঁদতে দেখেছো?
আমি দেখেছি, নদী একা একা কাঁদে
…আত্মার মতো…এই তো বেশি দূরে নয়,
মাত্র তিন শতাব্দী পিছনে চলে যেতে পারো।
আমাদের অনেক সুবিধে বলো?
যদি খাদ্যভার না থাকতো, অম্লরোগ না থাকতো,
আমরা অনেক দূর এগিয়ে হাঁটতাম।
এইসব হাঁটার কথা কেউ একদিন চেনাতে চেয়েছিলো?
না তেমন হাঁটা নয়, সেও কোনো ঘরই…ঘরের মতোই কোনো স্বর।
কে তুমি পাহাড়ী মেয়ে, তোমাকেও চিনি না,
ভাবিওনি তেমন করে। এটা কি অপরাধ?
অপরাধ কেন হবে, তুমি আলতো হেসে উত্তর দিলে।
ওমনি প্রশান্ত মহাসাগরে যে জাহাজটা অনেক দিন আগে ডুবে যেতো,
যেসব জাহাজের দল, ত্রিকোণ অন্ধকারে প্রেমের দিশা হারিয়ে ফেলতো,
সেই অন্ধকার রণমূর্তি হঠাৎ আলো হয়ে ওঠে।
আমরা তাঁহাকেই দুর্গা বলি, দেবী!