|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় সুরঞ্জনা মুখোপাধ্যায়

চন্দ্রগ্ৰহণ
বল্টুর সঙ্গে চোখাচোখি হতেই ভয়ে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে গেল রতনের।
সেদিন ছিল চন্দ্রগ্ৰহণ। অন্যদিনের চেয়ে একটু তাড়াতাড়িই রিক্সা নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছিল রতন।
চন্ডীতলার কাছে এসে একটা অস্পষ্ট আওয়াজ শুনে হঠাৎই থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছিল রতন।
রিক্সা সাইড করে শব্দের উৎস সন্ধানে এগিয়ে যাওয়ার খানিকক্ষণের মধ্যে ব্যাপারটা বুঝতে পেরেই শিরদাঁড়া বেয়ে বরফকুচি নেমে যাচ্ছিল ওর।
পরিত্যক্ত মন্দিরের পেছনের ঝোপে পড়ে আছে একটি মেয়ে, মুখটা অন্ধকারে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। মেয়েটি প্রায় অচৈতন্য, জামাকাপড় বিস্রস্ত, অস্ফুটে গুঙিয়ে চলেছে। আর নিজের কর্ম সম্পন্ন করে দামী বাইকে স্টার্ট দিয়ে বিপুল বিক্রমে এদিকেই এগিয়ে আসছে গ্ৰামের মোড়লের একমাত্র ছেলে বল্টু।
জন্মাষ্টমীর দিন রতনের স্ত্রী ফুটফুটে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছে। অফুরন্ত খুশির মধ্যেও রতনের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে সেই এক প্রশ্ন। কোনটা বেশী জরুরী ছিল? ধর্ষক বল্টুর শাস্তি পাওয়াটা? নাকি রতনের অনাগত সন্তানের সুরক্ষিত ভবিষ্যতের আশ্বাস? হয়তো দ্বিতীয়টা। তাইতো সেদিন রতন কিছু দেখেনি, রতন কিছু শোনেনি। মোড়লের হাত থেকে টাকার ব্যাগটা নেওয়ার সময় ও শুধু দেখেছিল কীভাবে রাহু বুভুক্ষের মত গোগ্ৰাসে গিলে খাচ্ছে চাঁদটাকে।