সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব – ৭১)

রেকারিং ডেসিমাল

সকালে একটু চোখ খুলে শরীরটা ভালো মনে হল।
ব্রাশ করে পাড়া বেড়াতে চললেন ডাক্তার মা। পাশের কেবিনের নতুন মাকে সবে জ্ঞান দান চলছিল বেবিকে ঠিক পজিশান করে ব্রেস্ট ফিডিং করানোর জন্য,  এর মধ্যে সিস্টার এসে উঁকি।
এই যে ম্যাডাম, চাকরি গুলো খাবেন আমাদের?  পেশেন্ট কেবিনে নেই। স্কার টেন্ডারনেস, শুয়ে থাকতে হয়। তার ওপরে প্রিপারেশনের সময় হয়ে গেছে। এদিকে বেড ফাঁকা, আবার ঘর ও খালি, স্যার জানলে এখুনি শো কজ করতেন ত ডিউটিতে থাকা স্টাফ নার্সকে।
চলুন চলুন, শিগগির। ওটি রেডি প্রায়।

ধড়াস করে ওঠে বুকের ভেতর।
ওটি! ?
কিন্তু, ওটি কি করে হবে?  ও সিস্টার বাড়িতে ত কেউ কিচ্ছু জানে না, তবে কেন…?

কে বলেছে জানে না?  স্যার ভোরবেলা নিজে ফোন করে খবর দিয়েছেন বাড়িতে। মাসি বলেছে ত সারা রাত ব্যথায় বসে ছিলেন। আর ফেলে রাখা যায়?
চলুন চটপট।
মাসি চুল বাঁধো জলদি। এত্ত চুল হাত চালাও।
দুটো বিনুনি করতে হবে ত।

ডাক্তার চুপটি করে বসে থাকে খাটে। পর পর ত মুখস্থ প্রিপারেশন।
দু দিকে বিনুনি। সব গয়না খুলে রাখা। নেল পলিশ টালিশ তুলে পরিচ্ছন্ন করা। সার্জিক্যাল গাউন সবুজ রঙের, পিছনে ফিতে দেয়া পরে ফেলেই ট্রলিতে চেপে পরা।
বুক ঢিপ ঢিপ করতে করতে শিব ঠাকুরের একহাজার আটখানা নাম আওড়ায় হবু মা।
তার রেডিওলজিস্ট বন্ধু বার তিনেক আল্ট্রাসাউন্ড করেছে।
তিন মাসে, পাঁচ মাসে, আবার সাত মাসে।
তিন বারই বলেছে মেয়ে।
মায়ের ফুটফুটে সুন্দর মেয়ে আছে, মা হাফ প্যান্ট পরা একটা দুষ্টু খোকন চাইছিল।
তার ঘরের টানাটানা চোখ হামা দেওয়া গোপালের মত।
নানা কিছু ভাবতে ভাবতে ট্রলিতে চড়ে পড়ে মা।
আয়া মাসিরা লিফটে তুলে দেয় ট্রলি।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।