গলির পিছনের দিকে এগিয়ে গিয়ে বাঁদিকে ঘুরে গেলে একটা পুরোনো বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায় একটা কানা গলি। একতলার ঘরের দু দিকে দুটো সাদা সিংহ। দুপায়ে দাঁড়িয়ে থাকা। একতলার আধো অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকে, অসাধারণ মেহগনির কোট স্ট্যান্ড, ভেনেশিয়ান কাঁচের আয়না, পুরোনো গড়গড়া, কালচে ভেলভেটের পর্দা, চোঙা দেয়া কলের গান।
সিনেমা থিয়েটারওয়ালারা এখান থেকে ভাড়া নিয়ে যায় এইসব মঞ্চ সাজানোর জন্য।
এগুলো এন্টিক। জায়গাটার নাম কর্ণওয়ালিশ এক্সচেঞ্জ।
পুরোনো সিনেমা পাড়া পাশেই। আগে স্টুডিও ও ছিল। এখান থেকেই ভাড়ায় যেত জিনিসপত্র।
নতুন বউ এখন পুরোনো মা। তাঁর দুই নম্বর ছানা এসে গেছে বাড়িতে।
গাবলেশ্বরী এখন গম্ভীর দিদি একজন।
কিন্ত মা যে ভাইকে নিয়ে এত ব্যস্ত সেটাতে মাঝে মাঝেই তিনি বড্ড বিরক্ত হয়ে যান। তখন সব সময় বাড়িতে থাকা কাজের মেয়ে তুলসী দিদি তাকে ঘাড়ে করে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে গলির রাস্তায়।
সেইখানে কর্ণওয়ালিশ এক্সচেঞ্জের সিংহদের হাঁ মুখের ভিতরে হাত দিয়ে তাদের দাঁত গুনে তবে বাড়ি ফিরতে রাজি হন কন্যে।
বাড়িতে মা তুলসীর কাছে গল্প শুনে রোজ মনে মনে হাসেন।
ছোট বেলায় অবন ঠাকুরের শকুন্তলা বইখানা পড়ার কথা মনে পড়ে যায়।
সিংহের দাঁত গোনা সেই যে বীর বাচ্চা সর্বদমন ভরত, যার নামে আজ দেশ ভারতবর্ষ, তার কথা মনে পড়ে যায়।
গোল্লাবুড়িকে কোলে নিয়ে বুকে জড়িয়ে বলেন, মা আমার সিংহদমন গাটুলা সর্দার।