ক্যাফে কাব্যে সুমিত মোদক

নিবিড় মায়া
নুড়ি সরিয়ে সরিয়ে পাথর উত্তোলন ;
সে পাথর থেকে জন্ম নেয় ভাস্কর্য এক ;
আদিবাসী মেয়ে বছরের পর বছর ধরে
দেখে এসেছে জলের অভাব কাকে বলে ;
কাকে বলে মোরগ লড়াই , জীবন ও মৃত্যু ;
প্রতি হাটবারে দেখেছে তাকে , স্বপ্ন-পুরুষ ;
অথচ , কিছুই বলার সাহস হয়নি ;
সাহস হয় না সমাজ-ভয়ে ;
নুড়ি-পথ পেরিয়ে ছুঁয়ে দিতে পারে
সরু হয়ে নেমে আসা ঝোরাটিকেও ;
অথচ , ছুঁতে পারেনি ধামসার বোল ;
দিকে দিকে পরবের ব্যস্ততা ;
প্রাচীন এক ভাস্কর্য শুনিয়ে যায় পূর্বপুরুষের পরম্পরা ,
শাল জঙ্গলের নিবিড় মায়া ;
মেয়েটি এক গভীর রাতে ছুঁয়ে দেয় পূর্ণিমার চাঁদ ,
প্রাচীন ভাস্কর্যটিকেও ;
তার পর অলৌকিক দুটো ডানা মেলে উড়তে উড়তে
উড়তে উড়তে দেখে নেই অতীত ও ভবিষ্যৎ ;
অথচ , বর্তমান বলে কিছু থাকে না ;
যে শিল্পী পাথর কুদে কুদে অপূর্ব সুন্দর
রূপ দেয় আদিবাসী রমণী ,
সে কি জানে সরল মনের হৃদয়-কথা !
কুমারী নদী কি জানে কি ভাবে শুকনো পাতা গুলো
উড়ে আসে তার বুকে !
এবারের হাট বারে তাকে আর দেখা যাচ্ছে না ;
বুকের মধ্যে এ কোন ধামসা বেজে উঠলো !
নুড়ি-পথ জুড়ে শুকনো পাতারা ওড়ে ।