T3 || শ্যামা আমার || দীপাঞ্জলী সংখ্যায় শমিত কর্মকার

 নোয়া ডাঙ্গার ভূত

শিমুলপুর গ্ৰামে নোয়া ডাঙ্গা নামে একটা জায়গায় একটা ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল। নোয়া ডাঙ্গার পাশে একটা পুরনো বাড়ি ছিল যা আজ পরিত্যক্ত এবং ভগ্নপ্রায়। গ্ৰামের লোকজন বলতো ওই বাড়িতে ভূত থাকে। বহু বছর আগে এবাড়িতে এক জমিদার পরিবার বাস করত।জমিদারের একমাত্র মেয়ে সিজা দেখতে যেমন ছিল সুন্দর তেমন সকলেরই প্রিয়। কিন্তু এই সিজা অদ্ভুত ভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়। বহু খোঁজা খুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গ্ৰামের লোকজন বলে সিজার প্রেমিক তার সাথে প্রতারনা করে হত্যা করেছে এবং তাই তার আত্মা এখনো ওই বাড়িতে ঘুরে বেড়ায়।প্রতি আমাবস্যার রাতে ঐ বাড়ি থেকে মৃদু সুরে বীনার সুর শোনা যায়।কেউ কেউ বলে সিজা কে সাদা শাড়ি পরে জানলার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছে।
একদিন ঐ গ্ৰামের এক সাহসী ছেলে বিক্রম ঠিক করলো আসল সত্যটা জানবে।এক পূর্ণিমার রাতে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করল। বাড়িতে ঢোকার সাথে সাথেই সে শরীরে এক অজানা শীতলতা অনুভব করল। চারিদিকে অন্ধকার, কিন্তু হঠাৎ করেই দূর থেকে মৃদু বীনার সুর শুনতে পেলো। সে এগিয়ে গেল সুরের উৎস খুঁজতে। হঠাৎ করেই যেন এক ছায়া মূর্তি তার সামনে এসে দাঁড়াল। বিক্রম ভয় পেল কিন্তু স্থির থাকলো।
ছায়ামূর্তি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে লাগলো এবং বিক্রম দেখলো সিজা তার সামনে দাঁড়িয়ে।সে বিক্রমকে বলল,”আমাকে মুক্তি দাও আমার আত্মা শান্তি পেতে চায়।”
বিক্রম ভয়ে কাঁপছিল, কিন্তু সাহস সঞ্চয় করে তার কথা শুনলো।সিজা তাকে জানালো তার প্রেমিক তাকে হত্যা করে পেছনের বাগানে পুঁতে রেখেছে। এরপর বিক্রম গ্ৰামবাসী দের বলে পেছনের বাগানে পুঁতে রাখা দেহ তুলে দাহ করল।
এরপর থেকে গ্ৰামের লোকজন ঐ বাড়ি থেকে আর কোন অদ্ভুত সুর শুনতে পাইনি।সিজা সত্যিই শান্তি পেতে চেয়েছিল, এই কথা গ্ৰামের মানুষ বিশ্বাস করে।আজ সে শান্তি পেয়ে গেছে চিরশান্তি।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।