• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক কোয়ার্ক ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব – ৬৮)

আটষট্টি

চিঠির বক্তব্য বিশ্বাস করতে দ্বিধা হচ্ছিলো । ABC কোনোদিন মিথ্যা বলে না ।অথচ বিষয়টা অবাস্তব । তাই দ্বিধায় ছিলাম । কিন্তু চিঠির তারিখ আর ওর মৃত্যুর তারিখ এক হওয়ায় বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম ।ডায়েরিটা খুলে দেখলাম, প্রথমে দেখে ডায়েরিটা খুলে দেখলাম, প্রথমে দেখে ডায়েরি মনে হলেও ওটা আসলে একটা খাতা এতো সুন্দর কভার দিয়ে বাঁধানো যে ডায়েরি বলেই মনে হয় ।প্রথম পেজ এই দেখি একটা কবিতা লেখা বাংলায় ।কিছু মানে বুঝতে পারলাম না ।তারপরের পেজে দেখি মাঝখানে শুধু লেখা বড় করে Australia । তারপরের পেজে ছোট ছোট রেট্র্যাঙ্গেল শেপের নানা ডিসাইন । এই ভাবে পরের পেজ গুলোতে এক পেজে নাম তো পরের পেজে নানান রকম রেট্র্যাঙ্গুলার চিহ্ন । স্বীকার করতে বাধা নেই অনেক চেষ্টা করেও আমি ওই ধাঁধার মানে কোনোদিন উদ্ধার করতে পারিনি । তবে এটা বুঝেছি যে ABC তার ছেলের জন্য সাংকেতিক কোনো বার্তা রেখে গেছে হয়তো । Quarko র সন্ধান দিতে । ডায়েরিটা আমি যত্ন করে রেখে দিয়েছিলাম । শুধু তাই নয় বিভিন্ন উপায়ে তাকে সংরক্ষণ করেছি । যেমন প্রত্যেক পেজের ভিডিও রেকর্ডিং করেছি কম্পিউটারে স্ক্যান কপি এবং সিডিতে রাইট করে রেখেছি । কারণ আমি জানি এই ডায়েরির গুরুত্ব অপরিসীম এবং তাই এই ডায়েরি চুরি যাওয়ার সম্ভবনা খুব বেশী । এই ডায়েরি আমার কাছে রাখাও যে বিপদজনক তা বুঝলাম যখন জানতে পারলাম ওই তিনজন কোয়ারী ওয়ার্কার,যারা ইতালির খাদানে কাজ করতো, তাঁদের মধ্যে একজন খুন হয়েছে । এবং বাকি দুজন নিখোঁজ । কিছুদিন পর আমার ধারণাই সত্যি হল । জনা পাঁচেক সন্ডা গুন্ডা একদিন আমার বাড়িতে এসে হাজির । আমার দিকে বন্দুক তাক করে জিজ্ঞেস করলো “ডঃ অমিত বিক্রম চৌধুরী কিছু আপনাকে জানিয়ে গেছে?”ওরা স্পেসিফিক কিছু না জানতে চাওয়ায় বুঝলাম ওরা ভাড়া করা গুন্ডা । আমার কাছ থেকে কি জানতে হবে তা নিজেরাই জানেনা । যাইহোক আমি কৌশলে বেঁচে যাই সেবারে । কিন্তু আমার সন্দেহ হয় ওরা নিশ্চয় দূর থেকে আমার ওপর অনেকদিন নজর রেখেছিলো । হয়তো এখনও রাখে । ওরা নিশ্চই ওই দুই অ্যালকেমিস্ট গ্ৰুপেরই লোক ।
ABC র গচ্ছিত জিনিস আমি যথাসাধ্য সাবধানে রেখেছি বটে কিন্তু তাকে সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিতে পারবো কিনা । জানিনা । ABC ছেলে রুডির হদিশ আমি জানিনা । ABC র স্ত্রী নিজের দেশে ফিরে অন্য জায়গায় চলে যায় । আমি এতো দূর থেকে ওদের খুঁজতেও পারিনি । খোঁজার জন্য খুব তোড়জোড় করিনি ।কারণ হিসেবে সে এখনো ডায়েরি পাওয়ার যোগ্য হয়নি । তবে সে ডায়েরি পাওয়ার আগেই যদি আমার মৃত্যু হয় তাহলে ডায়েরির হদিশ কিভাবে পাওয়া যাবে তা আমার এই ডায়েরি পড়লে বোঝা যাবে ।কেউ যেন এই ডায়েরির তথ্যগুলি রুডিকে সংক্ষেপে জানিয়ে দেয় । ABC র ডায়েরি আমি ডিজিটাইসড করে আমি বিভিন্ন জায়গায় রেখেছি । জায়গা গুলোর হদিশ আমি কাউকে দিতে চাইনা। রুডির ভালো নামটাও জানিনা । আমার লেখা এই ডায়েরিটার হদিশ আমি ধাঁধার আকারে কিছু বিশ্বস্ত লোককে দিয়ে যাবো । আমার মৃত্যুর পর সেই সব গোপন তথ্য খুঁজে পেলে সেটি এবং আরেকটি মেসেজ যেন রুডিকে দিয়ে দেয় । আমার সম্পত্তির দাবিদারকেই এই গুরুদায়িত্ব দিয়ে যেতে চাই । আমার উইলেও লিখে যাচ্ছি ধাঁধাটা । যে ওটা সলভ করতে পারবে সেই আমার সম্পত্তি পাবে। সলিসিটারকে বলা আছে যে ওনাকে নীচে দেওয়া পাসওয়ার্ডটা যে দিতে পারবে তাকেই যেন আমার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা দেওয়া হয়ে ।এই পাসওয়ার্ডটাই রুডিকে দিতে হবে । যেটা সমাধান করলেই ও ওর বাবার সম্পত্তি পাবে । পাসওয়ার্ডটা হল কলকাতার ট্যাক্সি no DY21SY8287’। এই আশা নিয়ে শেষ করছি যে আমার যোগ্য উত্তরাধিকারী ABC র উত্তরাধিকারীকে তার বাবার গোচ্ছিত বস্তুটি হস্তান্তর করে আমার গুরু দায়িত্ব পালন করবো । ডায়েরি পড়া শেষ হল । এখন আমার কাছে অনেক ব্যাপারই স্পষ্ট । Quarkor সন্ধান করাই আমার প্রধান কর্তব্য । এতো লোক আমার পেছনে সর্বদা ওই জন্যই লেগে আছে । কিন্তু ডঃ চোঙদারের কোনো উত্তরাধিকারী যদি ডায়েরিটা খুঁজে পেয়ে ধাঁধা সলভ করে তালে আমায় জানালো না কেন? হয়তো পুরো সত্যটা জানানোই মূল উদ্দেশ্য ছিল । হয়তো কিছু বা কোনো লোকের ধারণা, যে সব ঘটনা এবং পেছনে লুকিয়ে থাকা গল্প আমার জানা থাকলে, আমার বাবার রেখে যাওয়া ধাঁধাঁ সমাধান করতে সুবিধা হবে । তাড়াতাড়ি Quarko উদ্ধার হবে ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।