পিসেমশাই বলেন অন্যান্য মতগুলোতে সুপারিশ করা হয়েছে যে স্বপ্ন স্মৃতি গঠন, এবং মাথার ঘিলু সক্রিয় করতে সাহায্য করে । প্রায় কয়েক হাজার বছর আগে হরপ্পায় স্বপ্ন সম্পর্কে যে রেকর্ডগুলি পাওয়া গিয়েছিল সেগুলো কাদামাটি দিয়ে তৈরি ছিল। গ্রিক যুগে মানুষ বিশ্বাস করতেন যে স্বপ্নগুলি এক বা একাধিক দেবতার কাছ থেকে বা মৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে আসা বার্তা যা প্রধানত ভবিষ্যদ্বাণী হিসাবে গণ্য করা হতো । কিছু কিছু বুদ্ধিমান লোক স্বপ্নের চর্চা করত ।উনিশশো দশকের প্রথম দিকে দার্শনিক ফ্রয়েড মনোবিশ্লেষণের মনস্তাত্ত্বিক শৃঙ্খলা বিকাশ করেছিলেন তাছাড়া স্বপ্নের তত্ত্ব ও তাদের ব্যাখ্যা সম্পর্কে ব্যাপকভাবে লিখেছিলেন। তিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা করেছিলেন গভীরতম আকাঙ্ক্ষা এবং উদ্বিগ্নতা প্রকাশের মাধ্যমকে অবলম্বন করে যা প্রায়ই দমনমূলক শৈশব স্মৃতি বা আচ্ছন্নতা সম্পর্কিত । অধিকন্তু, তিনি বিশ্বাস করতেন যে বস্তুগতভাবে তার স্বপ্নের বিষয়টি অবশ্যই যৌন উত্তেজনা মুক্তির প্রতিনিধিত্ব করে। স্বপ্ন ব্যাখ্যা করার জন্য একটি মানসিক কৌশলকে বিকশিত করেছিলেন, ধারাবাহিক নির্দেশ দিয়েছিলেন যা আমাদের স্বপ্নে প্রদর্শিত চিহ্নকে বুঝতে সাহায্য করবে । আধুনিক যুগে স্বপ্নকে অবচেতন মনের একটি সংযোগ হিসাবে দেখা হয় । তারা স্বাভাবিক থেকে অসাধারণ রহস্যের উদ্ভট এর পরিসীমা নির্ধারণ করেছেন । স্বপ্ন বিভিন্ন প্রকৃতির হতে পারে ।
রতন বলে , স্বপ্ন অনেকরকমের হয়। উত্তেজনাপূর্ণ, জাদুকর, মর্মান্তিক, সাহসিক, যৌন উত্তেজক হতেও পারে । স্বপ্নের ঘটনাগুলি সাধারণত যিনি স্বপ্ন দেখেন তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে । কিছু স্বপ্ন আছে যেখানে স্বপ্নদর্শক আত্ম সচেতনতার পরিচয় দেয়। মাঝে মাঝে স্বপ্নের মাধ্যমে ব্যক্তির মধ্যে সৃজনশীল চিন্তাধারার উদ্রেক হতে পারে যার ফলে সে অনুপ্রেরণাও অনুভব করতে পারে। আবার ভয়ও পেতে পারে। এমনকি স্বপ্নে দেখা ভৌতিক ঘটনা অনেকসময় বাস্তবে ঘটে যায়।আমি বললাম, কি সাঙ্ঘাতিক ব্যাপার। তাহলে আমিও তো মাঝে মাঝে ভূত দেখি স্বপ্নে।পিসেমশাই বললেন, সে দেখতেই পারিস। কারণ আমরা তিনজন বেশির ভাগ সময় ভূত,প্রেত নিয়ে আলোচনা করি। সেগুলো মনের তৃতীয় স্তরে জমা হয়। তারপর স্বপ্নের মাধ্যমে অনুভূতিগুলো প্রকাশ পায়। পিসেমশাই বললেন, ছোড়ো ভূতকা বাতে, আভি কফি বানাও। পয়লে সরবত পিলাও কিছু খানাপিনা হোক রতন..,পিসেমশাই এর জগাখিচুড়ী হিন্দী শুনতে সকলের ভাল লাগে।
আমার বন্ধু মিলু আজ কলকাতা থেকে ফিরেছে। ফিরে প্রথমেই আমার সঙ্গে দেখা। আমি বললাম, মিলু কেমন আছিস
মিলু বললো, ভালো আছি তুই কেমন আছিস
আমি বললাম ভালো আছি তবে…
কথাটা বলতে না দিয়ে মিলু আমাকে বলল জানিস আশীষের সঙ্গে দেখা। গল্প করতে করতে এলাম।
আমার শোনার আগ্রহ বেড়ে গেল প্রথমে আমি বললাম আশীষ কি বলল
-সকলের খবর নিল বাদাম খেলাম
তুই খেয়েছিস কিন্তু আশীষ খেয়েছে কি না? আশীষ না খেয়ে পকেটে রাখল, বললো পরে খাবো।
আর কি বলল আশীষ
মিলি বলল, সে বলল ভেলোরে গেছিলাম আমার হার্টের অবস্থা ভালো নয়, বড়জোর আর কয়েকদিনের অতিথি আমি এই পৃথবীর।
আমি বললাম, কদিন বলেছিল না কয়েকঘন্টা বলেছিলো, মনে আছে।
– না তা মনে নেই তবে তুই এরকম গোয়েন্দার মতো প্রশ্ন করছিস কেন বুঝতে পারছি না।
আমি বললাম তুই আগে জল-টল খা।তারপর বলব। বন্ধু জল খেলো।
তারপর বলল বল কি খবর আছে আপডেট।
আমি বললাম আশীষ আজ ভোর পাঁচটায় মরে গেছে। আমার কাকু মরে গেছেন বলে শ্মশানে যেতে পারিনি। আমার অশৌচ চলছে।
বন্ধু বলল তাহলে আমি কার সঙ্গে এলাম ট্রেনে চেপে ছিলাম আমি আটটার সময় এখন দুপুর 12:00 টা। তাহলে এই সময়টা আমি বন্ধুর আশীষের সঙ্গে আসিনি।
আমি বললাম চল তো তোকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই তোর মানসিক অবস্থা কেমন উনি বলে দেবেন।
বন্ধু এলো। ডাক্তারের মুখের উপর প্রথমেই মিলু বললো আমি কি পাগল হয়ে গেছি ডাক্তারবাবু?
ডাক্তার বাবু বললেন, পাগল রা সকলকে পাগল ভাবে নিজেকে ছাড়া। তুমি পাগল হলে এই প্রশ্নটা করতে পারতেনা। ডাক্তারবাবু আরো বললেন, ‘আমি কি আমি কি পাগল হয়ে গেছি’ এ প্রশ্ন যিনি নিজেই নিজেকে করতে পারেন মনোবিদদের মতে তিনি ততক্ষণ পাগল নন। বন্ধু বলল পুরো ঘটনাটা ডাক্তারবাবুকে।
তিনি পুরো ঘটনাটা শুনে বললেন পৃথিবীতে এমন কিছু বিষয় এখনো আছে যার কোনো ব্যাখ্যা নেই। তর্ক পরে হবে। সব রহস্যের সমাধান হয় না। ভগবানের অস্তিত্ব থাকলে ভূতের অস্তিত্ব থাকা অসম্ভব কিছু নয়। আলোকে তো অন্ধকারে চিনতে পারি বেশি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের কুলকিনারা করতে পেরেছে বিজ্ঞান? মহাকাশের কতটুকু জানতে পেরেছে মানুষ?
মিলুকে নিয়ে আমরা চলে আমি চলে গেলাম গ্রামে । আমার কাকুর শ্রাদ্ধ আগামীকাল। সারাদিন বাড়িতে।
আত্মা প্রকট হয় তার পরের রাতে। বললেন জেঠু,তোমার কাকু মরে গেছে। তাই বাড়ির দোষ হয়েছে। কাটাতে হবে। তান্ত্রিকের ফর্দমত কিছু কিনে আমরা পরের দিন চলে গেলাম শ্মশানের কালী তলায়।
সেখানে তান্ত্রিক জেঠু সাধনা শুরু করলেন। এখন রাত দশটা বাজতে চলেছে আগের দিন থেকে একটা মড়ার মাথা আর্জেন্ট রাখা ছিল। মড়ার মাথার খুলি খেতে শুরু করল। কাটারি দিয়ে সেই জিওল মাছের টুকরো। তান্ত্রিক কাটারি করে কাটছেন মাছ। আর মড়ার মাথাকে দিচ্ছেন যেন মানুষের মতো খাচ্ছে। সেইমড়ার মাথা কাঁচা মাছ কচকচ করে খাচ্ছে। আমরা বড় ভয় পেলাম।