গল্পে সাঁচালি দত্ত

অনামিকার এক দিন

অনামিকা; রায় চৌধুরী বাড়ির একমাত্র মেয়ে, বাবা বড়ো ব্যবসায়ী, মা ও চাকরিজীবী ।
অনামিকা বরাবরই বড্ড আয়েসি, লেখা পড়া না করলে image নষ্ট হয়ে যাবে; তাই কোনোরকমে ইংলিশ অনার্স টা উতরেছে, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ার কারণে ইংরাজীতে কথা বলতে বেশ এক্সপার্ট অনামিকা, বাংলা ইংরেজী মেশানো একটা অদ্ভুত ভাষাতে কথা বলে অনামিকা, কলেজ এর মেয়ে রা বলে বড্ড নেকা নেকা, কিন্তু এই নেকা মেয়ে টাকেই physics অনার্স এর অভীক এর খুব ভালোলাগত ।।
সবে মাত্র চার মাস হলো বিয়ে হয়েছে অভীক আর অনামিকা র, আজকাল প্রায়ই ঝগড়া হয় অভীক আর অনামিকার, ঝগড়ার কারন টা অবশ্য অভীক এর মা, শাশুড়িকে নিয়ে একসাথে আর থাকতে চায় না অনামিকা, লেখা পড়া না জানা বোকা সোকা মানুষ টা বড্ড বেমানান; অনামিকার status এর সাথে ম্যাচ খায় না যে, এর মধ্যেই অনামিকা ডিভোর্সের আর্জি জানিয়েছে অভীক এর কাছে, শাশুড়ি মা জানলা দিয়ে সেদিন শুনেছেন সে কথা, পরদিন সকালে অনামিকাকে ডেকে পাঠিয়েছেন, অনামিকা, স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া কে কাঠগড়ায় দার করিও না মা ।
অনামিকাও বেশ দাপুটে মেয়ে, ভীষণ রেগে গেল মনে মনে, কিন্তু শাশুড়ির মুখের উপর কিছু বলতে পারলো না ।
আজ অভীক বাড়ি আসুক, এর একটা হেস্ত নেস্ত করেই ছাড়বে সে…
ভ্রূ কুচকে শাশুড়ির ঘর থেকে বেরিয়ে এলো অনামিকা, দুপুরে আজ লুকিয়ে zomato দিয়ে order করে খেয়েছে সে, শাশুড়ি মা অনেক বার খেতে ডেকেছেন, যায় নি অনামিকা ।
রাত 10 টা; অভীক ফিরেছে, অভীক এর ক্লান্ত মুখ টা দেখে বড্ড মায়া হলো অনামিকার, কিম্তু তাতে কি অভীককে মায়া দেখালে যে শাশুড়িকে উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে না, অভীক ফ্রেশ হয়ে নিলে, রান্না ঘরের দিকে ছুটল অনামিকা, আজ খাওয়ার table এই যা হওয়ার হবে, রান্না ঘরে ঢুকেই অনামিকা অবাক, দুপুরের খাওয়ার সযত্নে বেড়ে রাখা এখনও, শাশুড়ি মাও আজ খাননি..
পেছন থেকে শান্ত গলায় শাশুড়ি মা বললেন, চলো মা এবার আমরা একসাথে খেয়ে নি,অসফুটেই অনামিকার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পরলো ।।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।