|| মানচিত্র আর কাঁটাতার, হৃদয় মাঝে একাকার || বিশেষ সংখ্যায় সুখেন্দু দাস

অপর-কথা
অ বাবু, এটা কি হইঁচে বটে ?
পতাকা উত্তোলন।
হ, কি হবেক !
স্বাধীনতা দিবস উদযাপন।
হ, ইটা কি বটে ?
আজ আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল। মানে ব্রিটিশ সরকারের কাছে আমরা পরাধীন ছিলাম। আজ আমরা মুক্ত হয়েছি। আমাদের কেউ আটকে রাখতে পারে না। আমরা যা খুশি করতে পারি। যা কিছু বলতে পারি। কোনো কিছুতে বাধা নেই।
হ, যা খুশি কইরতে পারো ! যা খুশি …
না মানে, ঠিকঠাক …
অ বাবু, আমার মাইয়া-টারে দেখেছস ! আমার মাইয়াটা ! অ পাড়ার বাবু কোলকেত্তা লিয়ে এল। কাম দিবেক বলে। কাম !
কেন ? তোমার মেয়ের কি হয়েছে ?
জানি নাই বাবু, জানি নাই। মুঁ পশ্চিম থেকে আইচি। সিমলাপাল আছে নাই, উয়ার থাকে ৫ মাইল দূরে অরড়ায় থাকি। কোলকেত্তা থাকে এক বাবু আইছিল। বইললো খেঁদিকে কাজ দিবেক। উয়ার ভালো নাম লকখি বটে। তো খেঁদি আইসে বইলো – এ মা, উ বাবুটো ভালো বটে। দেখনা আমায় টাকা দিছে, আম-জাম দিছে। আমি বইললাম – না রে মা, ঠিক লাগচে নাই। এত দিছে কেনে ! বইলল – হ তোমার ত শুধু দিছে কেনে, আর দিছে কেনে। খেঁদি শুইনল নাই কোনো কথা …
বলি তোমার কাছে কোনো ছবি আছে ?
হ হ আছে ? ই দেখ বাবু ! দেখ –
এ ছবি তার খুব চেনা। কোথায় যেন সে দেখেছে…
(মোবাইল বেজে ওঠে – “LOKKHI IS CALLING …”)
হৃদয়ের ভিতর একটা আঘাত লাগে …
ও বুড়িমা, আমার একটু কাজ পড়ে গেছে। তুমি ও… ওকে জিজ্ঞেস করতে পারো। আমি আসি –
উ-উয়াকে, হ হ …
দূততার সাথে চলে যাওয়া পা ফিরেও দেখে না তাকে। বুড়ি হেঁটে চলে চেনা মুখের খোঁজে।
লকখি যেন আজও এক বিস্ময়…
শুনেছি সেবারে পতাকা উত্তোলনে দড়িটা ফেঁসে গেছিল। ঘড়াঞ্চি এনে জোর করে খোলা হয়েছে …