প্রবাসী মেলবন্ধনে সুদীপ্তা চট্টোপাধ্যায় (নিউ জার্সি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)

এক জলপরীর কথা
শ্রাবণের আভাসে পূবের ঝুল বারান্দাটায় যেন রিমঝিম সুর ,বিন্দু থেকে বিন্দু গড়িয়ে গড়িয়ে টুপ থেকে খুলে নেয় টাপ তারপর ডুবের সাঁতারে পেরিয়ে যায় একাকী নির্জন । বাউল রঙ গোধূলী গান বাঁধে,মেঘেদের আলতো ছোঁয়াছুঁয়ি খেলায় ছুটে আসে এক অপরূপ আলোর দ্যুতি, অভিমানিনীর খিলখিল হাসিতে জুড়ে যায় জলের সোহাগ! আর জলকথারা ছুঁয়ে যায় ওর চোখের পলক, দানায় দানায় মিশে যায় এক বাঁজা নারীর আখ্যান, কোল জুড়ে কী যেন এক না-থাকার কষ্ট ,দৃঢ় স্তনজুড়ে এক অপার শূন্যতার টনটন জল এলে, ওকে বিষাদে পায়…
ওর না পাওয়াটা ছড়িয়ে যায় জলের বৃত্তে, ওর উঠোনের জমা জলে একটাও কাগজের নৌকো ভাসে না, বর্ষার হঠাৎ পাওয়া রেনি ডে’তে একটা লাল,নীল ,সবুজ,হলুদ কাপড়ের ছাতার নিচে দুটো ছোটছোট পা,সবুজ রেনবুট উঠোনের জমা জলে ঝাঁপায় না! কোঁকড়াচুলের ঝাঁপি থেকে টপটপ জলফোঁটা গড়ায় না জল বোঝে মেয়ের চোখের জলের গল্প হয়ত তাই একটা শূন্যতাকে পূর্ণ করতে তরলতা ভুলে বাষ্প হয়, ভাসতে ভাসতে ফিরে যায় আবার মেঘেদের বুকে তারপর ফসলের দিনে সোনালী ধানের বুকে দুধ হয়ে নেমে আসে মাটির গভীরে সঞ্চয় করে বৃষ্টির ঝম ঝম ,কচি কচি চারাদের ত্রাণ। শুনশান রাত স্বপ্নে পায় এক আস্ত জলশহর। তুমি বল সুখের বাসায় দুঃখ বিলাস মানায় না ! চল আমরা জলপরীকে খুঁজতে যাই…
কোন এক অলৌকিক শ্রাবণে হঠাৎ ওরা খুঁজে পায় ছটফটে এক অনাথ আনন্দনিকেতন একটা একলা আঙুল খুঁজে পায় দুটো শক্ত মুঠির বিকেল,ছোট্ট ছাতার তলায় একটা মিষ্টি জলপরীর চুম্বন শুষে নেয় ওদের সমস্ত বাষ্পে গাঁথা ঝুল বারান্দার জলকথা।