সাঁকোর ওপর গামছা পেতে মৃত্যু বসে আছে।
নির্বিকল্প পার হয়ে যায়
ভ্রুক্ষেপহীন একা,
আমরা যারা দু’চার পয়সা
ভয়ে বা ভক্তিতে-
তারাই শুধু কয়েক দন্ড থমকে দাঁড়াই,দেখি
পলকবিহীন ওই দু’চোখে
উৎসমুখের ছবি।
২| ওরা জানে না
যে বাঁশি বাজায় সে জানে না,
কোন সুর ছুঁয়ে ফেললে
সে নিজেও বাঁশি হয়ে যায়।
যে গুলি চালায় সে জানে না,
কতটা নির্মম হলে
সে নিজেই বন্দুক হয়ে যায়।
যে ফুল কুড়োয় সে মেয়েটি জানে না,
ফুলের গায়ে আঁচল ঝরে পড়লে
সে নিজেও ফুল হয়ে যায়।
মৃত্যুর ছায়ার নীচে শুয়ে থাকা
শিশুটি জানে না-
পরীর স্বপ্ন চোখে নেমে আসতেই
সে নিজেও পরী হয়ে যায়।
৩| দিগন্তলীন
দিঘির জলে বিকেলবেলার লালচে মেঘের ছায়া
পাতার ফাঁকে দোয়েলপাখির গান,
চলতি পথে থমকে দাঁড়াই এমনই এই মায়া
সাঁঝের আগে পল্লীনারীর স্নান।
ধানের পাতায় জলের আদর বৃষ্টিধোয়া আলো
নয়ানজুলি আয়না হয়ে চুপ,
সন্ধে হলে ফুরিয়ে যাবে,বিকেলটুকু ভালো
আঁকছে স্নেহে প্রকৃতির এই রূপ।
অবাক দেখে ঝাপসা চাঁদও,মেঘের পাশে বসে
আর সকলে হয়তো উদাসীন,
ঘরমুখো সব কালচে পাখি আকাশমাটি চষে
কখন হলো দিগন্তে বিলীন।
সমস্ত সুখ,মায়ার বাঁধন তুচ্ছ লাগে ভেবে
অনন্ত এই আলোছায়ার খেলা-
সুন্দরের এই শিল্পী জানি নিজেই ডেকে নেবে
যাপনলীলার সাঙ্গ হলে বেলা।
৪| চলে গেলে সঙ্গে নিয়ে যাও
পাগলের হাত থেকে মুক্তি পেতে চাও তুমি,
তাহলে এ বন্দীদশা, বলো?
কতদিন ভালবাসা প্রছন্ন নিজেরই দোষে,
অর্ধেক জীবন কেটে গেলো।
যে তুমি আমার প্রতি নিশ্বাসে জড়িয়ে থাকো
অহর্নিশ চেতনে ও ঘুমে,
সেই আজ ঘৃণাবশে অব্যহতি চাও দেখি
বৈশাখী প্রেমের মরশুমে।
একান্তই ছেড়ে গেলে সঙ্গে নিয়ে যাও
যত অলৌকিক প্রিয় ডাকনাম;
যৌথ যাপনের সেই স্বপ্নটিও,
যাকে শুধু মৃত্যুর আগেই পোড়াতাম।