কবিতায় স্বর্ণযুগে শুভঙ্কর চট্টোপাধ্যায় (গুচ্ছ কবিতা)


জন্মদিনে,সুবোধদাকে
এই মুষ্টিবদ্ধ হাত কবিতার,
এই হিরন্ময় নীরবতা কবিতার জন্যই,
এই আশাবাদী চোখ,এই নির্লিপ্ত স্মিতহাস্য
কবিতাকেই মানায়।
তিনি নিজেই এক দীর্ঘ কবিতা,
যা আকৈশোর বয়ে চলেছে
নদীয়ার গ্রাম থেকে
কলকাতার অলিগলি রাজপথ পেরিয়ে
ইওরোপ,আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় ছুঁয়ে
কবিতার অলিন্দ,নিলয়ে।
তাঁকে চেনা একজীবনে হয়তো হবে না,
অথচ আমার মতো, আমাদের মতো
অক্ষর হাতড়ে বেঁচে থাকা
হাজার হাজার মুখ
সকলেই একডাকে চিনি।
আজ তাঁর জন্মদিন।শুভেচ্ছার সাথে
দু’চারটে লাল গোলাপ হয়ত দিতাম।
সে’ও তো শুকিয়ে যেতো,
তাই এই লেখা।
সুবোধদার শুভ জন্মদিনে।
তোমাকে দিলাম
তোমাকে না দেবার মতো
কিছুই ছিল না।
আমার প্রত্যাশা যত
সবই ছিল ওই দুই চোখে।
দিয়েছি কে. জি র ক্লাস,
অনার্স রেজাল্ট,
অনর্গল কথা বলা
বেহিসেব আশ্চর্য দুপুর।
কফির কাপের গায়ে
ঝুঁকে পড়া যত অভিমান
তার দামও তোমাকে দিয়েছি।
তোমার জেদেই এত অপছন্দের
স্কুল সার্ভিস মার্কা
পরীক্ষার শিকে।
তারপর দাবিহীন চোখের তারায়
অতি সাধারণ এক
সংসার এঁকেছো।
দিয়েছি দূর্বার ঘাস,
সিঁথির বিভোর।
অজান্তেই দিয়ে ফেলে
পদবীর অনর্থক ভার,
নিজের বোধের কাছে
ছোট হয়ে গেছি।
এরপরও দিয়ে গেছি
মর্যাদার স্ফটিক গোলক,
বেদুইন গান আর
স্বপ্নের পালক।
নিজের বলতে আর
কিছুই রাখিনি।
এখন দাঁড়িয়ে আছি
নিরাপত্তাহীন এক
লেভেল ক্রসিংয়ে।
এই নাও,
আমার সমস্ত আয়ু
তোমাকে দিলাম।
স্বীকারেক্তি
ভাল তো ওকেও বাসি,
কী করে করবো প্রতারণা?
কী করে বলবো তোকে
তোকে ছাড়া কাউকে বাসি না-
সমাজ যেটুকু দেখে,
প্রিয় দাদা,আমি প্রিয় বোন,
দেখা হলে ঘি-আগুনে
যজ্ঞ তো যখন তখন।
তারপরও একা ঘুমে
স্বপ্নে আসিস শুধু তুই,
মিথ্যে ভাববি জানি
ভালবেসে আজও যদি ছুঁই।
তবু তো মনের কাছে
নিজের আড়াল নেই কোনও
বন্ধুর মত করে
ভালবাসি তোকেই এখনো।