সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব – ৭৬)

পুপুর ডায়েরি

দুহাজার এগারো সালে ফেসবুক নামক জিনিসটা চিনলাম।
বাড়িতে ডেস্কটপ কম্পিউটার এসেছিলো বাচ্চাদের কম্পিউটার ক্লাস শুরু হল বলে ইস্কুলে।
ওরা ইস্কুলে চলে গেলে সেইটা নিয়েই খুটখাট করার অভ্যাস হল।
আরও বেশী করে, কারণ, বাড়ি থেকে, ২৪০৬ ৮৬৬৮ নম্বর থেকে, কেউ আর ফোন করছে না।
সীমা-স্বর্গ চুপ করে আছে।
আমার কাউকে বলার নেই, কেমন আছি, কী খেয়েছি সকাল থেকে, শরীর ভালো লাগছে কিনা..
সেই ফাঁক ভরাতে কম্পিউটার খুলে খুটখাট করি।
আর মেয়ে, ফেসবুক নামক জিনিসটা নিয়ে খুব ব্যস্ত, তাই আরও চেষ্টা করছি একে বুঝতে।

সেই সময়ে আলাপ হল শর্মিষ্ঠা ঘোষ নামের স্ফুলিঙ্গটির সাথে।
মুগ্ধ হয়েছিলাম তার কবিতা পাঠ করে। সে-ই আমার প্রথম ফেসবুক ফ্রেন্ড।
তার কবিতায় এখনো মুগ্ধ হয়ে থাকি।
তবে এখন সে অনেক কাছের মানুষ হয়ে গেছে।

আরেকটি ক্ষুদ্র তরুণ তুর্কীর সাথে ফ্রেন্ড হলাম।
তার নাম, চার অক্ষর।
আমি আখর ও বলি মাঝে মধ্যে।
সে আমায় ফেসবুক আই ডি ধরে বলে, পি পি এস বি এম।
নভেম্বর ষোলো তারিখ, আমরা, নানান বন্ধুদের মন্তব্য চালাচালির সূত্র ধরে নতুন লেখার শুরু করছিলাম।
পুপু লিখতে বসেছিল অনেক অনেক দিন পরে।

বন্ধুদের বলছিল, টাচউড বন্ধু ভাগ্য ভালো। তোমরাই উস্কে দিচ্ছো আমার স্মৃতির প্রদীপের সলতে।
তাতেই মনে পড়ে গেল, আসলে, একা পুপু,বই হাতে নিয়ে যাদবপুরের মামাবাড়িতে, মাঝের ঘরের খাটের বালিশে ঠেসান দিয়ে বসে থাকত ছুটির সময়। সামনে খোলা জানালা। তার পাশে দেখা যায়, কচুরিপানা ঢাকা বড়ো পুকুর। ওই পারটা ঝাপসা।
সেটাকেই রূপকথার দেশ মনে হতো।
তখন যে বইটাই পরি, সেটাই অডিও ভিসুভিয়ালে ফিল্মের মতো দেখতে পেতাম।
সত্যিকার ফিল্ম তো খুব বেশী দেখিনি তখন।
ছোটোদের দু চারটে ছবি ছাড়া সিনেমা দেখা বারণ ছিলো।
অবশ্য আমার মা ও আমার সঙ্গেই সিনেমা দেখা ছেড়ে ছিলেন।
পুপুকে একা ঘরে রেখে সিনেমা দেখতে চলে যাওয়াটা মায়ের বরদাস্ত হত না।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *