কবিতায় সুদীপ্ত বিশ্বাস

পুজো ২০২০ 

এইবার মাগো করোনা অসুর এসেছে তোমার আগে
কাঁটা দিয়ে ঘেরা চোখগুলো তার জ্বলছে রক্তরাগে।
চারদিকে দেখো মৃত্যু-মিছিল, শুনশান পথঘাটে
জীবাণু শাসায় খুব চুপিসারে বাতাসের চৌকাঠে।
শরতের মেঘ উপরে ভাসছে, কাশেরা ফুটেছে কত
বাজেনি তবু্ও পুজোর বাজনা , লোকজন থতমত।
তুমি নও শুধু মাটির পুতুল, কিভাবে সেকথা ভুলি
পেটের জ্বালায় স্নেহময়ী মায়ে হয়েছে মজুর-কুলি।
পরিযায়ী ওই মা’টিও ফিরেছে পায়ে হেঁটে গোটা দেশ
দুধের শিশুটি বুকে ছিল তার, গোটা পথে অনিমেষ!
আরো কত মা যে পারেনি ফিরতে, জোটেনি বাস বা ট্রেন
মাঝপথেতেই হঠাৎ বেজেছে মৃত্যুর সাইরেন!
ওই শিশুটিকে দাও গো পোশাক, দাও গো খেলনা কিনে
মা-বাপ যে তার পুরোই বেকার এবারের আশ্বিনে।
ছোট্ট শিশুরা পুজোর খুশিতে নাচুক তা ধিন ধিন
ফিরিয়ে দাও সে পুরনো পৃথিবী, খুশি ঝলমলে দিন।

খড়কুটো

তোমাকে বুঝবার বুদ্ধি বিধাতা দেননি কাউকে!
কখনও তুমি লাস্যময়ী উর্বশী,
কখনও তুমি মহিষমর্দিনী দুর্গা,
কখনও বা কল্যানরূপী লক্ষ্মী।
যখন তুমি দখিন বাতাস হয়ে পাশে আসো-
তোমার মিষ্টি স্পর্শে প্রাণ জুড়িয়ে যায়।
যখন তুমি ডানায় ডানায় পাশাপাশি উড়ে চল-
পথশ্রমের কোনও ক্লান্তিই থাকে না।
যখন তুমি হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যাও-
আমি আকাশ ভরা তারার মাঝে আমার তারা খুঁজি!
যখন তুমি নিজেকে উন্মোচিত কর-
তোমার অপার তরঙ্গ
আর অসীম গভীরতায় ভাসতে ভাসতে
আমার মনে হয়,
প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে আমি খড়কুটো।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।