|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় সোমনাথ বেনিয়া
by
·
Published
· Updated
মলম
রোজ চুয়াল্লিশ কিলোমিটার স্কুটি চালিয়ে অফিসে যাওয়া-আসা চারটিখানি কথা। তবুও পেটের টানে রাজুকে যেতে হয়। অফিস থেকে ফিরে কোনোরকমে হাত-মুখ ধুয়ে সে নিজের স্পেয়ার রুমে ঢুকে লাইট বন্ধ করে শুয়ে পড়ে। কেউ তখন তাকে বিরক্ত করে না। বিষয়টি বাড়ির সবাই জেনে গেছে। যাত্রাপথের সমস্ত ক্লান্তি ধীরে-ধীরে কোমরে এসে নামে। শুরু হয় মারাত্মক যন্ত্রণা। আসলে এতটা পথের জার্কিং বেশিরভাগ কোমরে এসে পড়ে।
একদিন এরকম অবস্থায় কিছুক্ষণ পর থাকতে না পেরে রাজু তার বউকে ডাকে যদি সে এসে ওই যন্ত্রনার জায়গায় ব্যথা কমানোর মলম দিয়ে মালিশ করে দেয়। দেখা গেল তখন সে তার শাশুড়ির পায়ে তেল মালিশ করে দিচ্ছে। তখন রাজুর আট বছরের মেয়ে এসে বলে, “বাবা, আমি মালিশ করে দেবো।”
“তুই দিতে পারবি? তা দে!”
মেয়ে তার নরম হাতে কিছুটা মলম নিয়ে কোমরে মালিশ করতে-করতে বললো, “বাবা, তোমার খুব কষ্ট হয়, তাই না!”
এই কথায় উবুর হয়ে শুয়ে থাকা রাজুর চোখ বন্ধ হয়ে আসে আর ভাবে মেয়ের এই কথার কাছে ওই মলমের গুণাগুণ কতটা গুরুত্ব পাবে! তাই পরের দিন থেকে কোমরে যন্ত্রণা শুরু হলে রাজু মেয়েকে ডেকে বলে, “মা, ওই কথাটা আবার বল না।”
“কোন কথাটা বাবা?”
“ওই যে, বাবা তোমার খুব কষ্ট হয়, তাই না!”