কৃষ্ণমোহন সামনের বাড়িতে একতলার ঘরে কয়লা আর কেরোসিনের দোকান করেছিল। উদ্যোগী পুরুষ। সারা পাড়ার লোকের জ্বালানি যোগান দিয়ে রমরম করে চলছিল ব্যবসা।
এবাড়ির বড় নাতি পাড়ার ছোট ইস্কুল ছেড়ে বড় ইস্কুলে ভর্তি হবার পরীক্ষা দিতে গেল এক দিন কাকার পাশে ডোঙা লাগানো পুলিশের বাইকে চড়ে।
ফিরে আসতেই মা দিদা সবাই ঘিরে ধরলেন।
হ্যাঁ রে, কি জিজ্ঞেস করল। নাকি লিখতে দিয়েছিল ? কি কি পারিসনি বল দেখি ঠিক করে।
পরীক্ষা দিয়ে ফেরা হাফ পেন্টুল গম্ভীর মুখে বলল, সব পেরেছি।
মা তাও এক এক করে জিগ্যেস করতে থাকেন।
সত্যিই সব ঠিকঠাক বলে যাচ্ছে ছাত্র।
শেষ প্রশ্নটা শুনেই মা আঁতকে উঠলেন।
–এইরে। কয়লা কোথায় পাওয়া যায়?
বাবু রে, এ প্রশ্ন ত পড়াইনি তোকে। যাহ। এইটা বাদ গেছে ত?
— ধুত। কি যে বল। এত সোজা প্রশ্ন। আমি নিজেই লিখে দিতে পেরেছি উত্তর।
— কি লিখলি?
মায়ের এবার চক্ষু ছানাবড়া।
স্মার্ট ছেলের চটপট উত্তর, কেন? এ তো সব সময় দেখতেই পাই। লিখে দিলাম।
কয়লা পাওয়া যায় কৃষ্ণের দোকানে।
এই বার সারা বাড়ি জুড়ে হে হে হে।
বাড়িতে চিরন্তন গল্প হয়ে রইল এ দিন।
কয়লা কোথায় পাওয়া যায়?
না, কয়লা পাওয়া যায় কৃষ্ণের দোকানে।
পরে কয়লার দোকান বন্ধ করে কৃষ্ণের ছেলেরা মস্ত মুদির দোকান খুলল।
ততদিনে দাদু দিদার ইস্কুলে যাওয়া নাতিও পড়তে চলে গেছে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হোস্টেলে।
বাড়িতে আসা নতুন জামাই বউয়েরা দাদুর বড় বউমার কাছে গল্প শোনে, জানো কত উপস্থিত বুদ্ধি ছিল আমার বাবুর। কেমন বলেছিল, কয়লা পাওয়া যায় কৃষ্ণের দোকানে ।